মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর রানাকে পাঠান হবে ভারত- রইল রানার বিস্তারিত পরিচয়, আমেরিকায় বড় জয়

ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টের ডিস্ট্রিক কোর্টের ইউএস ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক জ্যাকলিন চুলজিয়ান গত ১৬  আদেশ দেন ৬২ বছরের রানাকে ভারত প্রত্যাপর্ণ চুক্তির মাধ্যমে ভারতে হস্তান্তর করা উচিৎ।

 

Web Desk - ANB | Published : May 18, 2023 10:54 AM IST

আন্তর্জাতিক মঞ্চে আবারও বড় আইনি সাফল্য পেলে ভারত। ২০০৮ সালে মুম্বই হামলায় যুক্ত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার ব্যবসায়ী তাহাউর রানাকে ভারতে প্রত্যাপর্ণের অনুমোদন দিয়েছে আমেরিকার একটি আদালত। দীর্ঘ দিন ধরেই রানাকে ভারতে আনার চেষ্টা করা হচ্ছিল। দীর্ঘদিন পরেই এই সেই সাফল্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ সফরের আগেই রানাকে হাতে পেতে পারে ভারত।

জুন মাসি মার্কিন সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জে বাইডেনের আমন্ত্রণেই এই সফর। আগামী ২২ জুন হোয়াইট হাউসের রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে যোগ দেবেন মোদী। ভোজ সভা হোস্ট করবেন বাইডেন ও তাঁর স্ত্রী জিল। যাইহোক তার আগেই আমেরিকার আদালতে বড় জয় পেল ভারত।

ক্যালিফোর্নিয়ার সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টের ডিস্ট্রিক কোর্টের ইউএস ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক জ্যাকলিন চুলজিয়ান গত ১৬ মে ৪৮ পৃষ্ঠার একটি আদেশ জারি করেছিলেন, যা বুধবার প্রকাশিত হয়েছে। এই আদেশে বলা হয়েছে ৬২ বছরের রানাকে ভারত প্রত্যাপর্ণ চুক্তির মাধ্যমে ভারতে হস্তান্তর করা উচিৎ। তিনি আদেশনামায় আরও বলেছিলেন, আদালত অনুরোধের সমর্থন, বিরোধিতায় জমা দেওয়া সমস্ত নথি পর্যালোচনা আর বিবেচনা করে শুনানি উত্থাপিত যুক্তিগুলি বিবেচনা করেই এই নির্দেশ দিয়েছে। তাহাউর রানা বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেয়ের কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছে। সার্কিট কোর্টের আপিল করতে পারে যে, যা সম্ভবত জো আদালতের আদেশকে নিশ্চিত করবে। মার্কিন আইন অনুযায়ী সেক্রেটারি অব স্টেট হল কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নেয় পলাতক ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করবে কিনা।

ভারত ২০২০ সালের ১০ জুন থেকেই প্রত্যাপর্ণের লক্ষ্যে আইন লড়াই করছিল। বাইডেন প্রশাসন রানাকে ভারতে প্রত্যাপর্ণের বিষয়টি সমর্থন আর অনুমোদন করেছিল। একটি প্রশ্নের জবাবে, স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র পিটিআইকে বলেছেন যে 'এই মামলার সুনির্দিষ্ট তথ্যের জন্য আমরা আপনাকে বিচার বিভাগে পাঠাই।' তিনি আরও বলেন, 'তবে, আমরা বলতে পারি যে আমরা বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমরা ভারতের সাথে আমাদের সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ সম্পর্ককে গভীরভাবে মূল্য দিই। আমরা ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি'।

রানার বিষয়ে ভারতীয় আমেরিকান অ্যাটর্নি বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান ব্যবসায়ীকে ভারতে প্রত্যর্পণের অনুমোদন দিতে বাধ্য হবেন কারণ ওয়াশিংটন প্রত্যেকটি দেশের সঙ্গে সুস্থ আর মসৃণ সম্পর্ক রাখতে চায়। তিনি আরও জানিয়েছেন এই আদেশে আইনি প্রোটোকল সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা দেওয়া হয়েছে।

জানুন কে এই তাহাউর রানাঃ

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান ব্যবসায়ী তাহাউর রানা। মুম্বই হামলায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত।

ভারতীয় তদন্ত অনুযায়ী তাহাউর রানা তাঁর ছোটবেলার বন্ধু ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মুম্বই হামলা সংগঠিত করেছিল। তারা দুজনেই পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবাকে সাহায্য করেছিল।

ডেভিড কোলন্যান হেডলি ও তাহাউর রানা পাকিস্তানের মিলিটারি হাইস্কুলে একসঙ্গে পড়াশুনা করে। সংবাদ সংস্থা এপির রিপোর্ট অনুযায়ী শিকাগোতে রানার অভিবাস আইন কেন্দ্র। সেই সঙ্গে মুম্বইয়ে একটি স্যাটেলাইট অফিস ছিল। যা ২০০৬ - ২০০৮ সালের মধ্যে তাদের জঙ্গি কার্যকলার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হত।

২০১১ সালে তারাউর রানাকে শিকাগোর ইলিনয়েতে দোষী সাব্যস্ত করা হয় পাকিস্তানের লস্কর গোষ্ঠীকে সাহায্য করার অভিযোগে। এই জঙ্গি গোষ্ঠী মুম্বই হামলায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল।

তাহাউর রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, ডেভিড কোলম্যান হেডলিকে তাঁর শিকাগোর অভিবাসন আইন ব্যবসার একটি কভার স্টোরির জন্য ও মুম্বইতে একটি শাখা অফিস খোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই ছদ্মবেশের আড়ালেই ডেনমার্কের একটি কোম্পানির প্রতিনিধি বিসেবে হেডলি ভারতে ভ্রমণের অনুমতি পেয়েছিল। সেই মুম্বইয় হামলার ব্লু প্রিন্ট তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ছবি আর ম্যাপ সরবরাহ করেছিল।

হেডলি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ইলিনয় মামলায় তাহাউর রানার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিল। তবে তার আর্জি ছিল একটাই তাকে কখনই প্রত্যাপর্ণ চুক্তির অংশ হিসেবে ভারতে পাঠান যাবে না।

আরও পড়ুনঃ

পরিচয় করুন স্বাধীনতা সংগ্রামী নিশাত হাসরাতের সঙ্গে, যিনি দেশের জন্য পরদা প্রথা ত্যাগ করেছিলেন

Pakistan Situation: ইমরানের পক্ষ নেওয়ার অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্ট বিরোধী জোরালো আন্দোলনে পাকিস্তান জোট সরকার

'আর্জেন্টিনা সরকার একটা সময় আমার মাথা কেটে ফেলতে চেয়েছিল', হাঙ্গেরি বলেন পোপ ফ্রান্সিস

 

Share this article
click me!