
আক্রমণ বনাম পাল্টা আক্রমণে তপ্ত ইরান-ইজরায়েল সম্পর্ক। শুক্রবার রাতেই ইজরায়েলের উপর পাল্টা আঘাত হেনেছে তেহেরান। ইজ়রায়েলের রাজধানী তেল আভিভের অন্তত ৭টি জায়গায় জায়গায় জোরালো ক্ষেপণাস্ত্র হানা চালাল ইরান। ইজরায়েলের সামরিক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, তেল আভিভ এবং তার পার্শ্ববর্তী অন্তত একাধিক জায়গায় এক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে। আর এরই মধ্যে পরমাণু হামলা নিয়ে ইরানকে কড়া হুঁশিয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের।
ইরানের ঘরে ঢুকে ইজরায়েল বাহিনীর হামলার ঘটনায় চরমে নানা জল্পনা। কেউ কেউ মনে করছেন তেহেরানের উপর ইজরায়েলি হামলার পিছনে মার্কিন মদত রয়েছে। যদিও এই বিষয়ে নানা জল্পনা চললেও স্পষ্টভাবে কিছুু জানা যায়নি।
১৩ জুন শুক্রবার ইরানের উপর হামলা চালায় ইজরায়েলি সেনাবাহিনী। এদিকে মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ইজ়রায়েলের দিকে আসা ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে আটকাতে সাহায্য করছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার আমেরিকার দুজন আধিকারিক বলেছেন, ইজ়রায়েলের দিকে উড়ে আসা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে ধ্বংস করতে সাহায্য করছে মার্কিন সেনাবাহিনী। যদিও এই নিয়ে মুখ খুলে কার্যত ইরানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন ট্রাম্প।
সূত্রের খবর, শুক্রবার নিজের সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প লিখেছেন যে, ‘’পরমাণু চুক্তি মেনে নেওয়ার জন্য ইরানকে একের পর এক সুযোগ দিয়েছি। আমি ওদের খুব কড়া ভাবে বলেছিলাম, আপনারা এটা মেনে নিন। হয়তো তারা চেষ্টা করেছে, হতে পারে প্রায় মেনেও নিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটা হয়নি। আমি এ-ও বলেছিলাম, আপনার যে রকম ভাবছেন, ব্যাপারটা এর চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে।''
ইজরায়েল যে যেকোনও মুহুর্তে ইরানের উপর হামলা চালাতে পারে। আগেই এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের সেই আশঙ্ক সত্যি করে শুক্রবার রাতে পরপর বোমা হামলা চালায় ইজরায়েল।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের তরফে যুদ্ধরত দুই দেশকেই এই রক্তক্ষয়ী বিবাদে ইতি টানার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, ইতিমধ্যে অনেক কিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। অনেকের মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু এই বিবাদে ইতি টানার এখনও সময় আছে। কারণ, আবার হামলা হতে পারে এবং সেই হামলা ভয়ঙ্কর হতে চলেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ট্রাম্প আরও বলেন যে, ‘'ইরান সমঝোতা না করলে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। এটা ইরানীয় সাম্রাজ্যকে বাঁচানোর সময়। খুব দেরি হয়ে যাওয়ার আগে চুক্তি মেনে নিন। ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করুন।''
শুক্রবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে ট্রাম্প একপ্রকার ইরানকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তারা ইজরায়েলের পাশে রয়েছেন। মুখে না বললেও ইজরায়েলের যে কোনও সিদ্ধান্তে যে আমেরিকার সমর্থন রয়েছে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ট্রাম্প।
সূত্রের খবর, রবিবার ওমানে পরমাণু বৈঠকে বসার কথা আমেরিকা এবং ইরানের। আমেরিকা চায় না ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাক। একাধিক রিপোর্টে দাবি, ইরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে অবশ্য এই বিশুদ্ধতার পরিমাণ আরও কয়েক শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে ইরানকে। কিন্তু আমেরিকা চায়, এখানেই থেমে যাক ইরান। তবে এখন দেখার ট্রাম্পের এই বার্তার পর কোনদিকে গড়ায় ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের জল।