
রাশিয়া চায় এখনই ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করুক। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিতে রাজি নয় ইউক্রেন। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় অঙ্গীকার করেছে ইউক্রেনবাসী। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন রাশিয়া ক্রমাগত হামলা চালিয়েছে যাচ্ছে। রুশ হামলায় বিপর্যস্ত ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকা। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ইতিমধ্যেই প্রচুর মানুষ দেশে ছেড়ে চলে গেছেন। রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল গ্যাস ও বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যবহত হয়েছে।
এদিকে, এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে মিসাইল হামলা চালানোর পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের দাবি, ফাইটার জেট নয়, এখন ইউক্রেনের দরকার ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র (Surface-To-Air Missiles)। মার্কিন বিদেশমন্ত্রক (US State Department) বৃহস্পতিবার একটি আমেরিকান বিমান ঘাঁটির মাধ্যমে ইউক্রেনে মিগ ফাইটার জেট (fighter jets) পাঠানোর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। পাশাপাশি জানিয়েছে, রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য কিয়েভকে (Kyiv) মিসাইল (ground-based weapons) ব্যবহার করতে হবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বারবার ওয়াশিংটন ও ন্যাটোকে বিমান পাঠাতে বা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের ওপর রাশিয়ার বিমান হামলা থেকে রক্ষার জন্য একটি "নো-ফ্লাই জোন" প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেছেন, "আমরা আমাদের ইউক্রেনীয় সেনাবন্ধুদের সারফেস-টু-এয়ার সিস্টেম সরবরাহ করতে থাকব যা তাদের রুশ ক্ষেপণাস্ত্র, রাশিয়ান রকেট, আর্টিলারি থেকে যে হুমকির সম্মুখীন হতে হবে তা মোকাবেলা করতে সাহায্য করবে।"
প্রাইস এদিন আরও বলেছেন যে ইউক্রেনের ইতিমধ্যেই নিজস্ব "সম্পূর্ণ মিশনে সক্ষম" বিমানের বেশ কয়েকটি স্কোয়াড্রন রয়েছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে আরও বেশি বিমান পাঠালে সংঘর্ষ আরও বাড়তে পারে।
উল্লেখ্য, পোল্যান্ড তার সোভিয়েত যুগের মিগ-29গুলিকে জার্মানির রামস্টেইনে একটি মার্কিন বিমান ঘাঁটির মাধ্যমে কিয়েভে পাঠাত, এমন পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই পরিকল্পনায় বাদ সাধে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বুধবার পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মারিউস ব্লাসজ্যাককে বলেছেন যে ওয়াশিংটনের এই পরিকল্পনায় জড়িত হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।
রাশিয়ান বাহিনী বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের অন্তত চারটি বড় শহর ঘিরে ফেলেছে, রুশ সেনার সাঁজোয়াগুলি রাজধানী কিয়েভের উত্তর-পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। এদিকে, গতকালই রুশ বিমান হানায় গুঁড়িয়ে দেওয়া ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিউপোলের (mariupol) একটি শিশু হাসপাতাল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলাদিমির জেলেনস্কি (Volodymyr zelensky) বলেছেন, মারাউপোলের একটি হাসপাতালে রাশিয়ার বিমান হামলার পর শিশুরা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে জেলেনস্কি আরও বলেছেন, ধ্বংসাবশেষের নিচে প্রচুর মানুষ চাপা পড়ে রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি রুশ বিমান হামলা বন্ধ করার আর্জিও জানিয়েছেন। বলেছেন অবিলম্বে বিমান হানা ও হত্যা বন্ধ করুন। উদ্ধারকাজ করতে সাহায্য করুন।