মৃতের তকমা নিয়ে বেঁচে থাকা ১২ মাস, 'ডেড সি'-র রহস্য সত্যিই অবাক করে

  • এই হ্রদকে ভূপৃষ্ঠের সবচেয়ে নিম্নভূমি হিসেবে গণ্য করা হয়
  • সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪৩০ মিটার নিচে অবস্থিত এই হ্রদ
  • এই সাগরে বা হ্রদে কোনও প্রাণের বসবাস নেই বললেই চলে
  • প্রাচীনকাল থেকে এই হ্রদটির জল মিশরের মমি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হত
     

deblina dey | Published : Aug 22, 2019 10:59 AM IST

ভাবছেন 'ডেড সি' আবার কোনও সাগরের নাম হয় নাকি! সাগর বলা হলেও এটি আসলে একটি হ্রদ যার সর্বোচ্চ গভীরতা ৩০৪ মিটার। মধ্য প্রাচ্যে অবস্থিত এই হ্রদকে ভূপৃষ্ঠের সবচেয়ে নিম্নভূমি হিসেবে গণ্য করা হয়। এর পৃষ্ঠভাগ ও তীরদেশ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪৩০ মিটার নিচে অবস্থিত।  এছাড়াও পৃথিবীর লবনাক্ত জলাশয়গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এই হ্রদের পূর্ব সীমান্তে রয়েছে জর্ডান এবং পশ্চিম সীমান্তে যথাক্রমে ইসরাইল ও প্যালেস্টাইন।

কেন এই জলাশয় ডেড সি নামে পরিচিত! এর কারনটা হল, এই হ্রদের জলে লবণাক্ততার পরিমাণ প্রায় ৩৪.২%, যা সাধারণ সমুদ্রের জলের চেয়ে ৮.৬ গুণ বেশি। অত্যধিক লবণাক্ততার কারণেই জলজ প্রাণীরা এই জলাশয়ে জীবনধারণ করতে পারে না। তাই এই সাগরে বা হ্রদে কোনও প্রাণের বসবাস নেই বললেই চলে। এর ফলেই এর নাম মৃত সাগর বা ডেড সি।
নাম মৃত সাগর বা ডেড সি হলেও এখানে ভয় পাওয়ার মত কোনও বিষয় বস্তু নেই। এই সাগরে কোনও প্রানী যেমন বসবাস করতে পারে না। তেমন কোনও মানুষ চাইলেও এখানে ডুবে থাকতে পারবে না। এখানে জলের লবনাক্ততা বেশি হওয়ার কারণে প্লবতা অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যান্য সাগরের জলের তুলনায় ডেড সির জলে থাকা খনিজ উপাদানগুলোর প্রচুর পার্থক্য আছে। প্রাচীনকাল থেকে এই হ্রদটির জল মিশরের মমি তৈরির জন্য় ব্যবহৃত হত। সার উৎপাদনের জন্য, পটাশসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থের উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই হ্রদ থেকে প্রাপ্ত লবণ ও খনিজ পদার্থ বিভিন্ন প্রসাধনী ও সুগন্ধি দ্রব্য তৈরিতে এখনও ব্যবহার করা হয়।


এই জলে শুধু কয়েক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া ছাড়া আর কোনও প্রানীর অস্তিত্ব নেই। আর এখানে মাছ না থাকার কারণে এ হ্রদের ওপর দিয়ে কখনও পাখি উড়তেও দেখা যায় না। মৃত সাগরে মাছ থাকতে না পারলেও মানুষের জন্য এটি একেবারে স্বর্গ। রোগীদের বায়ু পরিবর্তনের এক আদর্শ জায়গা হিসেবে বিশেষজ্ঞদের কাছে পরিচিত এই মৃত সাগর। বিশেষ করে নানা জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত রোগীদের থাকার জন্য এর চেয়ে ভাল জায়গা আর হয় না বলে মনে করা হয়। 

আরও পড়ুন- বাজারে এল ১০হাজার টাকারও কমে ৪টি ক্যামেরা সহ মোবাইল! জানুন বিস্তারিত
অনেকে বিশ্বাস করেন, ডেড সির মাটি অনেক ধরনের রোগ নিরাময়েও সহায়ক। আর এই কারণে এ অঞ্চলটি চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণাস্থল হয়ে উঠেছে। এর মূলে রয়েছে হ্রদের জলে খনিজ দ্রব্যাদির উপস্থিতি, বাতাসে এলার্জি উৎপাদক দ্রব্য এবং উচ্চ ভূ-মণ্ডলীয় চাপ, সৌর বিকিরণে অতিবেগুনি উপাদানের কম উপস্থিতি। বিশেষ করে যাঁরা স্বাস্থ্য ভাল করতে বেড়াতে যান, তাঁদের জন্য এটা স্বর্গ। তাই আর দেরি না করে একবার ঘুরে আসুন এই সাগরে। 
 

Share this article
click me!