তুরস্ক আর সিরিয়া ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে পরপর তিনটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে। মৃতের সংখ্যা ৪ হাজারেরও বেশি। উদ্ধারকাজ চলছে। তবে বাধা বৃষ্টি।
তুরস্ক আর সিরিয়ার মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে চার হাজারেরও বেশি মানুষের। বিস্তীর্ণ এলাকা মৃত্যুপরীর চেহারা নিয়েছে। একের পর এক বাড়ি ভেঙে পড়ে রয়েছে। এই অবস্থায় এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। তবে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ।
জীবিতারা এখনও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে পড়ে রয়েছে। বাঁচার জন্য আর্তনাদ করছে। চারদিকে শুধুই আর্তনাদ। তবে এই অবস্থায় তৎপর উদ্ধারকারী দলগুলি। ইতিমধ্যেই উদ্ধার হওয়া ট্রামাগ্রস্ত মানুষদের নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রচন্ড ঠান্ডা আর তার মধ্যে বৃষ্টির কারণে দুর্গতদের আরও সমস্যা বাড়ছে। বিপর্যস্ত এলাকার অধিকাংশ মানুষই সোমবার রাতটা খোলা আকাশের নিচে কাটিয়েছে। অনেকের যেমন আশ্রয়স্থান নেই। তেমনই অনেকে আবার আতঙ্কের কারণে ঘরে থাকতে পারছে না।
পরপর তিনটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে তুরস্ক ও প্রতিবেশী সিরিয়ার প্রায় ১০টি প্রদেশে। এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বড় শহর প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সাড়ে তিন হাজার বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ১ লক্ষেরও বেশি।
টানা ১২ বছর গৃহযুদ্ধের কারণে বিধ্বস্ত সিরিয়া। এই দেশের অধিকাংশ মানুষই প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছিল তুরস্ক। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ সীমান্ত বা কাঁটাতারের বেড়া মানে না। ভূমিকম্প ও তার একের পর এক আফটার শক দুটি দেশেরই বিস্তৃর্ণ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। মৃতের সংখ্যা কোথায় গিয়ে থামবে তার এখনও বলা যাচ্ছে না বলেও মনে করছে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।
তরুস্কে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটেপ থেকে মাত্র ৩৩ কিলোমিটার দূরের একটি এলাকা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এলাকার বেঁচে থাকা মানুষরা শপিং মল, স্টেডিয়াম, মসজিদ ও কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছিল। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান সাত দিনের জন্য জাতীয় শোকের কথা ঘোষণা করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তুরস্ক ও সিরিয়ার নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। দুটি দেশই প্রয়োজনীয় সাহায্য পাঠাতে শুরু করেছে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড, ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ত্রাণ হিসেবে পাঠিয়েছে। অন্যদিকে আগেই ভারত জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী পাঠিয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসক পাঠান হয়েছে তুরস্কে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে তারাও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।
সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ছিটমহল এলাকায় শত শত পরিবার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে পড়ে রয়েছে। হোয়াইট হেলমেট নামে পরিচিত জরুরি পরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, যুদ্ধের কারণে দেশের অন্যান্য অংশ থেকে বাস্তুচ্যুত প্রায় ৪ মিলিয়ন মানুষ এখানে আশ্রয় নিয়েছিল। আগেই বোমার আর যুদ্ধের কারণে তাদের বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছেল। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তাদের শেষ আশ্রয়স্থলটিও হারিয়ে গেল। আরও একবার ভিটেমাটি হারা হলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার বহু মানুষ।
আরও পড়ুনঃ
ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কে ভারতের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, সঙ্গে প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড
ত্রিপুরায় দাঁড়িয়ে বাম-কংগ্রেসকে একযোগে নিশানা অমিত শাহ, বলেন কমিউনিস্টদের ফিরতে দেবেন না