
হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে তোলপাড় হয়ে গিয়েছে সমগ্র ইরান। ফুটবল বিশ্বকাপের মঞ্চেও মুখ বন্ধ রেখে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের সেরা ফুটবলাররা। সেই আন্দোলনে যোগ দেওয়াকে ‘অপরাধ’ বলে গণ্য করছে ইরান প্রশাসন। এই অপরাধেই এবার অন্তত ৪০০ জন বিক্ষোভকারীকে দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দিল তেহরানের আদালত।
তেহরানের বিচারবিভাগীয় প্রধান আলি আলঘাসি-মেহর এই ঘোষণা করেছেন। তবে এর চেয়েও বেশি আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে নাগরিকদের প্রাণদণ্ড দেওয়া নিয়ে। ২০ নভেম্বর ইরানের রেভলিউশনারি কোর্টে মহসেন শেকারি নামে এক আন্দোলনকারী যুবকের বিচার হয়, সেই বিচারে তাঁকে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল প্রশাসক। তাঁর পরে আরও একজন যুবককে প্রকাশ্য রাস্তায় ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়েছিল ইব্রাহিম রাইসির সরকার, তাঁর নাম ছিল মাজিদরেজা রাহনাভার্দ। এবার কার পালা, তা নিয়েই সন্ত্রস্ত্র রয়েছেন সুবিচার চাওয়া ইরানবাসী।
হিজাব ‘ঠিক করে’ না পরায় ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানবাসী কুর্দিশ তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করেছিল ইরানের নীতি-পুলিশ। গ্রেফতারির আগে পর্যন্ত তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ সুস্থ। কিন্তু, পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন তিনি মারা যান। এই ঘটনার পরেই ইরান জুড়ে শুরু হয় হিজাব-বিরোধী আন্দোলন। মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষেরাও মিছিলে পা মেলান। ইরান সরকার গোড়া থেকেই কড়া হাতে আন্দোলন দমন করছে। তারই পদক্ষেপ হিসেবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল মহসেনকে। সেটাই ছিল দেশে হিজাব-আন্দোলন দমন করার জন্য প্রথম ফাঁসি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, তেহরানের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে তিনি আধাসামরিক বাহিনীর এক জওয়ানকে হত্যা করেন।
মহসেনের পর ২৩ বছরের যুবক মাজিদরেজাকে প্রকাশ্য রাস্তায় ক্রেন থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। নভেম্বর মাসে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতারির পর তাঁর মাকে ছেলের সঙ্গে দেখা করারও অনুমতি দেওয়া হয়, কিন্তু তখনও মাজিদের মাকে জানানোই হয়নি যে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হবে। ছেলেকে দেখে হাসিমুখেই বাড়ি ফিরেছিলেন মা। তারপরের দিন সকালেই মাজিদরেজাকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। হাত-পা বেঁধে, মাথা কালো ব্যাগ দিয়ে ঢেকে ক্রেন থেকে ঝুলিয়ে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল মাজিদরেজাকে। সেই ছবিও সারা দেশ জুড়ে ভাইরাল হয়ে যায়।
আর কত প্রতিবাদীকে জানিয়ে বা না-জানিয়ে প্রাণদণ্ড দেওয়া হবে, সরকারের পক্ষ থেকে তা নিশ্চিত করা হয়নি। তবে কারাদণ্ড দেওয়া নিয়ে বিশেষ ঘোষণা করেছে ইরান সরকার। শুধুমাত্র তেহরানেই সাজা দেওয়া হয়েছে প্রায় ৪০০ জনকে। বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলির হিসেব অনুযায়ী, ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করে রেখেছে ইরান সরকার।
হোয়াটসঅ্যাপের ডেটা লিক হয়নি, হ্যাকারের জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে ব্যবহারকারীদের নিশ্চিন্ত করল অ্যাপ কর্তৃপক্ষ
স্নাতকোত্তর না পড়েই পিএইচডি? জাতীয় শিক্ষা নীতির অধীনে ইউজিসি-র নয়া নিয়ম, সম্মত হচ্ছেন না শিক্ষাবিদরা
বঙ্গে চলছে বড়দিনের প্রতীক্ষা, তবে তাপমাত্রার পারদ নিম্নমুখী হলেও জাঁকিয়ে শীত এখনও অধরা