পাকিস্তানের মন্ত্রী হিনা রব্বানি খানের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে কড়া মন্তব্য করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি হিলারি ক্লিন্টনের মন্তব্যের কথাও উল্লেখ করেন। বলেন সেই সময় হিনা মন্ত্রী ছিলেন।
গোটা বিশ্ব দেখছে পাকিস্তান 'সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর'। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খানের মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে বললেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কথা প্রসঙ্গে তিনি প্রাক্তন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিরালি ক্লন্টনেরর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন । আর পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনা করেন। জয়শঙ্কর বৃহস্পতিবার রাষ্ট্র সংঘের সদর দফতরে "গ্লোবাল কাউন্টার টেররিজম অ্যাপ্রোচ: চ্যালেঞ্জস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড" শীর্ষক নিরাপত্তা পরিষদের ভারতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একটি বক্তব্য রাখার পরে পরে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন। সেখানেই সাংবাদিকরা তাঁকে হিনা রব্বানি খারের মন্তব্য প্রসঙ্গে তাঁর মতামত জানতে চান। সেখানেই জয়শঙ্কর বলেন পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর- আর সেটা গোটা বিশ্বই জনে।
পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খারের মন্তব্য প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর এক প্রশ্নের উত্তরে জয়শঙ্কর বলেন, 'আমি দেখেছি মন্ত্রী খার কী বলেছে, তার রিপোর্টও পড়েছি। এবং আমাকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল এক দশকেরও বেশি আগে হিলারি ক্লিন্টনের পাকিস্তান সফর প্রসঙ্গ। সেই সময়ও কিন্তু হিনা রব্বানি খার মন্ত্রী ছিলেন।' মন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে সেই সময় মার্কিন প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন বলেছিলেন, কেউ যদি নিজের বাড়ির উঠনে সাপ পুশে রাখে তবে এটা বিশ্বাস করা ঠিক নয় সেই সাপ শুধুমাত্র প্রতিবেশীদেরই ছোবল মারবে। সাপ যে বাড়িতে থাকে সেই বাড়ির সদস্যদেরও ছোবল মারতে পারে। এই কথা বলে জয়শঙ্কার পাকিস্তানকে কটাক্ষ করে বলেন, 'আপনি জানেন যে পাকিস্তান কোনও দিনই সৎ পরামর্শ গ্রহণ করতে পারে না।' কারণ সেই সময়ই হিলারি ক্লিন্টন পাকিস্তানকে হাক্কানি নেটওয়ার্ক ও অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ও সাহায্য করার নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন।
জয়শঙ্কর এদিন বলেন, 'আজ গোটা বিশ্বই পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থল হিসেবে দেখে।' তিনি আরও বলেন কোভিড মহামারি গোটা বিশ্বেই ছিল। এখন ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছে। এই অবস্থায় সক্রিয় হচ্ছে জঙ্গি সংগঠনগুলিও। কিন্তু সন্ত্রাসবাদী হিসেবে যারা কালোতালিকাভুক্ত - তারা যে পাকিস্তানের আশ্রয়ে রয়েছে তা প্রমাণ হয়েছে পাকিস্তানের কথায়। কারণ গত পাকিস্তান সম্প্রতি জানিয়েছিল যে গত ২৩ জুন লাহোরে মুম্বই হামলা মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সইদের বাড়ির সামনে একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। পাকিস্তান দাবি করেছে সেটি ভারত করিয়েছে।
পাকিস্তানের এক সাংবাদিক জয়শঙ্করকে এদিন জিজ্ঞাসা করেছিলেন দক্ষিণ এশিয়া কবে দেখবে যে নতুন দিল্লি, কাবুল ও পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদ ছড়ানো বন্ধ হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে জয়ঙ্কর কড়াভাবেই জানিয়েদেন তিনি ভুল মানুষকে সেই প্রশ্ন করেছেন, কারণ এই প্রশ্নের জবাব একমাত্র পাকিস্তানের মন্ত্রীরাই দিতে পারবেন। জয়শঙ্কর এদিন স্পষ্ট করেই জানিয়েদেন পাকিস্তান সরকারিভাবে সন্ত্রাসবাদে মদত দিচ্ছে।
জয়শঙ্কর আরও বলেছেন, বিশ্ববাসী বোকা নয়, বিশ্ব ভুলে যায়না- যেসব মানুষ সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তাদের কথা। তিনি পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে নাম না করেই একটি পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন ভাল প্রতিবেশী হয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। তাতে বিশ্বের যেমন লাভ হবে। তেমনই সেই দেশটিরও লাভ হবে। আর্থিক বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নয়নেরও অগ্রগতি সম্ভব। তিনি বলেন সন্ত্রাসবাদ শুধুমাত্র ধ্বংসই করে। পাশাপাশি আফগানিস্তানের উদ্দেশ্যেই তিনি বলেন,ভারত এখনও আশা করে কাবুলের দখল নেওয়ার পরে আফগানিস্তা বা তালিবানরা সন্ত্রসবাদের ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে না। তারা বিশ্ববাসীকে সম্মান করবে।
আরও পড়ুনঃ
ইমরান খানের রাজনৈতিক জীবনে ইতি? তেমনই রাস্তা তৈরি করছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন