ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ ২০২৫: একসময়ের বন্ধুত্ব থেকে কীভাবে তৈরি হল শত্রুতা? জেনে নিন ইতিহাস

Published : Jun 17, 2025, 07:05 PM IST
ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ ২০২৫: একসময়ের বন্ধুত্ব থেকে কীভাবে তৈরি হল শত্রুতা? জেনে নিন ইতিহাস

সংক্ষিপ্ত

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ ২০২৫: ইজরায়েলের তেহরানে মিসাইল হামলা, পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু। ইরানের তেল আবিবে ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা। পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা বৃদ্ধির পেছনের কাহিনী।

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ ২০২৫: ১৩ জুন সকালে ইজরায়েল ইরানের রাজধানী তেহরান এবং অন্যান্য শহরে একের পর এক মিসাইল হামলা চালায়। লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটি, সামরিক ঘাঁটি এবং ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (IRGC)-এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এই হামলায় বেশ কয়েকজন ইরানি পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুরও খবর পাওয়া গেছে। তেহরান সরকার এটিকে 'কূটনীতির উপর সরাসরি আক্রমণ' বলে অভিহিত করেছে, কারণ কিছুদিনের মধ্যেই ইরান-আমেরিকার মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল।

ইরানের পাল্টা হামলা: তেল আবিবে ব্যালিস্টিক মিসাইল, আয়রন ডোমও ব্যর্থ

সন্ধ্যার পর তেহরান পাল্টা হামলা চালায়। ইরানের সেনাবাহিনী ইজরায়েলের সামরিক ঘাঁটিগুলিতে ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করে। এর মধ্যে কিছু মিসাইল তেল আবিবের সেই এলাকায় পৌঁছে যায়, যেখানে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (IDF) সদর দপ্তর অবস্থিত। আয়রন ডোমের মতো অত্যাধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও কিছু মিসাইল ঠেকাতে ব্যর্থ হয়, যার ফলে এই সংঘাত আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

নেতানিয়াহুর স্পষ্ট সতর্কবাণী: খামেনির মৃত্যুই যুদ্ধের অবসান

ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে এই যুদ্ধ এখন ব্যক্তিগত হয়ে উঠেছে। তিনি বলেছেন, এই সংঘাত ততক্ষণ পর্যন্ত চলবে যতক্ষণ না ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির মৃত্যু হয়। এই বক্তব্যের পর পশ্চিম এশিয়ায় চতুর্মুখী যুদ্ধের আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ইরানি বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ইজরায়েল 'নতুন রেড লাইন' অতিক্রম করেছে এবং এই হামলা যেকোনো শান্তিপূর্ণ আলোচনা বন্ধ করার চেষ্টা।

যখন ইরান ও ইজরায়েল 'বন্ধু' ছিল

আজকের রক্তাক্ত সম্পর্ক একসময় বন্ধুত্বে আবদ্ধ ছিল। ১৯৪৮ সালে যখন বেশিরভাগ মুসলিম দেশ ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করছিল, তখন শিয়া অধ্যুষিত ইরান এবং তুরস্ক ছিল দুটি বড় ব্যতিক্রম। ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি এবং ইজরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন-গুরিয়নের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক এতটাই দৃঢ় ছিল যে ইরান ইজরায়েলকে অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করত এবং দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা - মোসাদ এবং SAVAK - পরস্পরের জন্য কাজ করত।

১৯৭৯: বিপ্লব যা সম্পর্ক ভেঙে দিল

১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামি বিপ্লব সবকিছু বদলে দেয়। শাহর ক্ষমতা চলে যায়, আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির কর্তৃত্ব আসে এবং ইজরায়েলকে 'ইসলামের শত্রু' এবং 'ছোট শয়তান' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

এরপর ইরান আঞ্চলিক জঙ্গি সংগঠন যেমন হিজবুল্লাহ, হামাস এবং হাউথিদেরকে শুধু অর্থায়নই করেনি, প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্রও সরবরাহ করেছে।

২০০০ থেকে আজ পর্যন্ত: বিষ বাড়তে থাকে

২০০০ সালে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ইজরায়েলকে 'ক্যান্সারের টিউমার' বলে অভিহিত করেন এবং ২০২৩ সালে হামাস কর্তৃক ইজরায়েলের উপর চালানো হামলা দুই দেশের মধ্যে দূরত্বকে যুদ্ধে পরিণত করে। ইজরায়েল গত বছর ইরানের বেশ কয়েকটি মিসাইল ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দেয়। এই বছরের হামলাগুলিকে সেই ধারাবাহিকতারই অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

অক্সফোর্ডের বর্ষসেরা শব্দ ‘রেজ বেইট’, আর কোন কোন শব্দ পেল সেরা স্থান? জানুন এক ঝলকে
News Round Up: বাবরি মসজিদ নিয়ে মমতা-হুমায়ুন তরজা থেকে দেশজুড়ে ইন্ডিগো-র বিমান বিপর্যয়, সারাদিনের খবর এক ক্লিকে