রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আর প্রিগোজিন সেন্ট পিটার্সবাগের বাসিন্দা। যেসমস সোভিয়েত রাশিয়া ছিল সেই সময় দুজনেই গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি-র হয়ে কাজ করছেন।
বেলারুশ চলে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধু তথা ওয়াগনার ভাড়াটে সেনা দলের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। কিন্তু কেন তিনি বেলারুশ যাচ্ছে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ ক্রেমলিন থেকে বলা হয়েছে ওয়াগনার প্রধানের সঙ্গে চুক্তির মত পরিস্থিতি তৈরি করতে পেরেছে রুশ সরকার। আর সেই কারণেই তাঁকে বেলারুশ যেতে বলা হয়েছে। বেলারুশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের ধারনা বেলারুশেই রুশ প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তি করতে পারে ওয়াগনার বস।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ আর সেনা অভ্যুত্থানের জন্য ওয়াগনার বসের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দেশদ্রোহ-সহ একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু ওয়াগনার ভাড়াটে সেনাদের দাপটে ত্রস্ত রুশ সরকার পিছিয়ে যেতে বাধ্য এই অবস্থায় ওয়াগনার প্রধানকে শান্ত করে সেনা অভ্যুত্থান থেকে পিছিয়ে আনাই মূল উদ্দেশ্যে। আর সেক্ষত্রে রাশিয়ার পাশে রয়েছে বেলারুশ। যদিও রুশ প্রশাসন জানিয়েছে দেশের মধ্যে রক্তপাত এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। অন্যদিকে বেলারুশের প্রধান আলেক্সন্ডার লুকাঙেশ্ঙো প্রিগেজিনদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে বসতে সক্ষম হয়েছে। সেখানেই ইয়েভজেনির বিরুদ্ধে রাশিয়া যেসব ফৌজদারি মামলা করেছিল সেগুলি তুলে নেওয়ার শর্তেও আলোচনায় রাজি ওয়াগনার বস। বেলারুশ প্রশাসন আরও জানিয়েছে, ওয়াগান ভাড়াটে সেনাদের প্রতি রুশ প্রশাসনের শ্রদ্ধা এখনও রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ বলে স্বীকার করে নিয়েছে ক্রেমলিন।
বর্তমানে রাশিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল। এই অবস্থায় এক ঝলকে দেখে নিন কে এই দুর্দান্ত ইয়েভজেনি প্রগোজিনঃ
রাশিয়ার হাইপ্রোফাইল তালিকায় শীর্ষস্থানীয় নাম। শিল্পপতি হিসেবেও তাঁর নাম উল্লেখযোগ্য। হোটেল ব্যবসা রয়েছে। সর্বোপরি তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার আগে পর্যন্ত ছিলেন পুতিনের সবথেকে ঘনিষ্ট বন্ধু। ক্রেমলিনে ছিল তাঁর অবাধ যাতায়াত।
পুতিন-প্রিগোজিন সম্পর্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আর প্রিগোজিন সেন্ট পিটার্সবাগের বাসিন্দা। যেসমস সোভিয়েত রাশিয়া ছিল সেই সময় দুজনেই গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি-র হয়ে কাজ করছেন। প্রিগোজিন একটা সময় সেখান থেকে বেরিয়ে এসে হট-ডগএর ব্যবসা শুরু করেন। যদিও কিশোর বয়সে ১০ বছর জেল খাটার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সেটাও আবার সশ্রম কারাদণ্ড।
পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্টতার আগে পর্যন্ত হোটেল ব্যবসাতেই মন দিয়েছিলেন প্রিগোজিন। হোটেল ব্যবসার সূত্র ধরেই পুতিনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্টতা তৈরি হয়। তারপর তিনি নিজের উদ্যোগে একটি ভাড়াটে সেনার দল তৈরি করেন। যেখানে সরকারিভাবে রাশিয়ার সেনা বাহিনীর পৌঁছাতে পারত না সেখানেই পৌঁছে যেত ওয়াগনার বাহিনী। বেসরকারিভাবে ২০১৪-১৫ সালে ইউক্রেনের লড়াই করেছিল ওয়াগনার গ্রুপ। তাছাড়া সিরিয়া-সহ একাধিক দেশের সক্রিয় ছিল এই ভাড়াটে সেনার দল। কিন্তু চলমান ইউক্রেন যুদ্ধই প্রিগোজেনি-পুতিনের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়। কারণ ওয়াগনার বস একাধিকবার অভিযোগ করেছিলেন ইউক্রেনে তার বাহিনীরর সদস্যদের মরচে পাঠান হয়েছে। এর জন্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে একাধিকবার নিশানাও করেছেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ রুশ সেনাবাহিনীর জন্য পর্যাপ্ত খাবার রসদ পাঠান হলেও তাঁর বাহিনী সেসব থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত। একাধিকবার এই অভিযোগের কারণেই পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে চিড় ধরে। তারপরই পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা- যা আগুনে ঘি ফেলার মত অবস্থা তৈরি করে। এখন দেখার বেলারুশ পুতিন আর প্রিগোজিনর দূরত্ব কতটা কমাতে পারে।
আরও পড়ুনঃ
'ভারত-ব্রিটেন সম্পর্ক বিশ্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ', বললেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক
হোয়াইট হাউসের চমক নীতা অম্বানির, সিল্কের ওপর সোনার সুতোর কাজ করা শাড়িতে ফোটালেন ভারতীয় ঐতিহ্য