ওয়াগনার বাহিনীকে যেসব একালায় মোতায়েন করা হয়েছে সেখানেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। ভাড়াটে সেনারা স্থানীয় সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস, বরবর অত্যাচার করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ইউক্রেন থেকে সরে গিয়ে ক্রমশই রাশিয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়াগনাররা। ওয়াগনার দলের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন দাবি করেছেন দক্ষিণ রাশিয়ার অধিকাংশই তাদের দখলে রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, তাঁদের আরও দাবি রাশিয়ার সাধারণ মানুষ রয়েছে তাদের সঙ্গে। রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধের সময় যে ওয়াগনার গ্রুপের ওপর রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন সবথেকে বেশি ভরসা করেছিলেন এখন সেই ওয়াগনার গ্রুপই তাঁর ত্রাশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারপ যে পুতিনের মত যুদ্ধবাজ নেতাও স্বীকার করে নিয়েছেন ' সময়টা খুবই কঠিন'। সূত্রের খবর রাশিয়ার সেনা বাহিনীর থেকেও বেশি ক্ষমতা রয়েছে এই ভাড়াটে সেনা বাহিনীর হাতে। যাইহোক এখন প্রশ্ন হচ্ছে কারা এই ওয়াগনার গ্রুপ? কেনইবা তাদের এত দাপট- যে তারা পুতিন বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ?
১. ওয়াগনার গ্রুপের আনুষ্ঠানিক নাম পিএমসি ওয়াগনার। PMC Wagner। রাশিয়ার আধা সামরিক সংস্থাও বলা যেতে পারে। তবে মোটেও খাতায় কলমে নয়।
২. রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্টি মিত্র তথা হোটেল ব্যবসায়ী কোটিপতি ইয়েভজেনি প্রিহোজিনের ডিফ্যাক্টো প্রাইভেট আর্মি হিসেবে দেখা হয়।
৩. রাশিয়ার সামরিক বাহিনী যেখানে সরকারিভাবে কাজ করতে পারে না সেখানেই পুতিন তাঁর বন্ধুর ভাড়াটে সেনাদের পাঠিয়ে দিত। এই ভাড়াটে সেনার দল অধিকাংশ সময়ই সরকারিভাবে কোনও কাজই করে না।
৪.ওয়াগনার গ্রুপ রাশিয়ায় এতটাই ক্ষমতাশালী যে তারা রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউর একটি ডিফ্যাক্টো ইউনিট হিসেবে কাজ করতে পারে। এই সংস্থাগুলিতে অবাধ যাতায়াত ছিল এদের।
৫. ওয়াগনার গ্রুপের নিজেদের কোনও আদর্শ নেই। পয়াসা বা চুক্তির বিনিময় কাজ করেই অভ্যস্ত। তবে শোনাযায় নব্য নাৎসিপবাদ ও উগ্রডানপন্থী ভাবধারাকে তারা প্রবলভাবে সমর্থন করে।
৬. ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যদের ব্যবহার করে এতদিন রাশিয়ার সরকার বিশেষ করে পুতিন সরকার বিদেশে একাধাকি কাজকর্ম করেছে। যারমধ্যে রয়েছে ২০১৪-১৫ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ। এরা সিরিয়া, লিবিয়ার গৃহযুদ্ধেও অংশ নিয়েছিল।
৭. ওয়াগনার বাহিনীকে যেসব একালায় মোতায়েন করা হয়েছে সেখানেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। ভাড়াটে সেনারা স্থানীয় সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস, বরবর অত্যাচার করে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ধর্ষণ, হত্যা, ছিনতাই- সবকিছুর সঙ্গেই এরা যুক্ত থাকে।
৮. রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম দিকে যথেষ্ট সক্রিয় ছিল ওয়াগনার গ্রুপ। সূত্রের খবর সেই সময় এদের মূলত ইউক্রেন নেতাদের হত্যার জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল। আমেরিকার দাবি ইউক্রেনের প্রথম দিকে প্রায় ৫০ হাজার ভাড়াটে সেনা ছিল। যাদের মধ্যে ১০ হাজার চুক্তিভিত্তিক আর ৪০ হাজার কারাবন্দি।
৯. দীর্ঘ দিন ধরেই রাশিয়ার সরকার ওয়াগনারদের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক অস্বীকার করছিল। কিন্তু ২০২২ সালে পুতিনের বন্ধু প্রগোজিন স্বীকার করে নেন ভাড়াটে সেনা দল তাঁর। যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করছে।
১০. সংস্থার সাইট অনুযায়ী ২০১৪ সালে ভাড়াটে সেনার দল তৈরি হয়েছিল। এদের সদর দফতর সেন্ট পিটার্সবার্গে। এরা মূলত রুশ সেনা বাহিনী, ডানবাসে রুশ বিচ্ছিন্নতাবাহীন, সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী মিত্র হিসেবে কাজ করেছে। যদিও এখন রুশ বাহিনীর সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই দল।
আরও পড়ুনঃ
কংগ্রেস-সিপিএম একসঙ্গে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় পাটনার বৈঠক নিয়ে আক্রমণ বিজেপির
কায়রোতে উষ্ণ অভ্যর্থনা প্রধানমন্ত্রী মোদীকে, ভারতীয় মহিলা শোনালেন 'ইয়ে দোস্তি...' - দেখুন ভিডিও
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম মিশর সফর মোদীর, ২ দিনের ঠাসা কর্মসূচিতে বাণিজ্য নিয়ে বড় ঘোষণার সম্ভাবনা