
Japan Lightning Strikes: পৃথিবীতে প্রতি বছরে বজ্রপাতের কারণে গড়ে ২ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। একইসঙ্গে কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতিও হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহে বাধা, দাবানলের মতো বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে এটি। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি মিনিটে পৃথিবীর বুকে কমপক্ষে ৬,০০০ বজ্রপাত ঘটে। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরেই বজ্রপাতের প্রকোপও দিন দিন বেড়ে চলেছে। প্রাণহানি থেকে সম্পত্তিহানি, বিমানবন্দর, তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, হাওয়াকলের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর ক্ষতি থেকে বাঁচাতে এবার জাপানের বিশাল টেলিকম কোম্পানি (NTT) Nippon Telegraph and Telecom কোম্পানি বজ্রবিদ্যুৎ থেকে বাঁচতে নতুন প্রযুক্তির ড্রোনের আবিষ্কার করেছে। এটি শুধু বিপদ এড়ানোই নয়, ভবিষ্যতে বজ্রের বিপুল শক্তিকে বাক্সবন্দি করে মানবসভ্যতার উন্নয়নের কাজেও লাগানোর পথে একধাপ এগিয়ে গিয়েছে জাপান। তবে এত পরিমাণে চৌম্বকীয় বিদ্যুৎ ধরে রাখার মতো প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা এখনও তৈরি হয়নি। এই ব্যবস্থাও তৈরি করে নিতে পারলে ও বজ্রপাতকে নিয়ন্ত্রণ করে ভবিষ্যতে অনেক কাজে লাগানো যাবে।
জাপান আকাশে উড়ে বেড়ানো ছোট আকারের ড্রোনগুলোতে ফ্যারাডে কেজ (faraday cage) লাগিয়ে এমন ড্রোনের আবিষ্কার করেছে যা আকাশের বজ্রপাতকে মাটিতে আছড়ে পড়তে দেয় না। নিজে থেকেই বজ্রকে আকর্ষণ করে রিফ্লেক্ট করে বা বলা যায় বাইরের দিকে সঞ্চালিত করে দেয় বজ্রকে। ফলে না ড্রোনের কোনও ক্ষতি হয়, না বজ্রপাত মাটিতে আছড়ে পড়ে মানুষ বা সম্পত্তির ক্ষয় ক্ষতি করতে পারে। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ১৫০ কিলো অ্যাম্পিয়ার্স বিদ্যুৎশক্তি সইতে সক্ষম এই ড্রোনগুলি। যা সাধারণ বজ্রপাতের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি শক্তিশালী। সুতরাং, একদিকে ড্রোনগুলি বজ্রকে যত্রতত্র বিক্ষিপ্তভাবে মাটিতে আটকে পড়া থেকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে। আবার অন্য দিকে বজ্রপাতের আগাম আভাস দিতেও সম্ভব এই ড্রোনগুলি।
ব্রিটিশ পদার্থবিদ মাইকেল ফ্যারাডের আবিষ্কৃত Faraday Cage। ড্রোন দিয়ে বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণের এই প্রক্রিয়ায় Faraday Cage -এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৮৩৬ সালে আবিষ্কৃত হয় Faraday Cage। যা বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ এর কুপরিবাহী। ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, মোবাইল ফোনের 4G প্রযুক্তি, এই সবকিছুই বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ। এমনিতে এই তরঙ্গকে আটকানো যায় না। কিন্তু বিদ্যুৎ পরিবাহী ধাতব খাঁচা বা বাক্সের সাহায্যে তাকে বাইরের দিকে সঞ্চালিত করে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে। যে কারণে গাড়ির উপর বজ্রপাত ঘটলেও ভিতরে বসে থাকা যাত্রীরা সুরক্ষিত থাকেন। সেই একই পদ্ধতিতে বজ্রের আঘাত সয়েও আকাশে টিকে থাকছে ড্রোন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।