গ্রিনল্যান্ডের বরফ নিয়ে সতর্কতা জারি বিজ্ঞানীদের, পাশের দেশগুলোতে আতঙ্কের ঢেউ
গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাদর হঠাৎ গলে যেতে পারে যদি পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.৭ ডিগ্রি এবং ২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস আরও ওপরে থাকে। এক গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বরফ গলে বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে।
বরফ গলে বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে দ্বীপ দেশগুলোর একটি বড় অংশ ডুবে যেতে পারে। সবচেয়ে বড় বিপদ সেই সব দেশের জন্য যাদের পৃষ্ঠ সমুদ্র থেকে মাত্র ১-২ মিটার উপরে।
গবেষণা বলছে ভবিষ্যতে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ঠান্ডা হলে বরফের ক্ষয় কমতে পারে। নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। 'ইউআইটি দ্য আর্কটিক ইউনিভার্সিটি অফ নরওয়ে'-এর গবেষকদের নেতৃত্বে একদল গবেষক এই গবেষণাটি করেছেন।
বরফের চাদরের ৬০%-রও বেশি এলাকা জুড়ে হিমবাহের উপরিভাগের ১ মিলিমিটার স্তরে বরফ গলতে দেখা গিয়েছে। যার ফলাফল, ঘণ্টায় অন্তত ১ হাজার কোটি টন বরফ গলে গিয়ে সমুদ্রে মিশেছে।
ডেনমার্কের আবহাওয়া সংস্থার বিশেষজ্ঞ রুথ মোটরামের দাবি, ওই হিমবাহ থেকে অন্তত ১৯,৭০০ কোটি টন জল আটলান্টিকে গিয়ে মিশেছে। মার্টিন স্টেনডেল নামে আর এক বিজ্ঞানীর দাবি, ওই পরিমাণ জলে এক মাসে সমুদ্রতল আনুমানিক ০.১ মিলিমিটার বাড়বে।
বিজ্ঞানীরা স্পষ্টভাবে জোর দিয়েছিলেন যে বরফের চাদরের ধীর গলনের অর্থ এই নয় যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের চেষ্টাকে ধীর করা উচিত। গ্রিনল্যান্ডের বরফের গলন ২০০২ সাল থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের ২০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে অনুমান করা হয়।
পৃথিবী উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে বিশ্বের অনেক হিমবাহ ২০৫০ সালের মধ্যে গলে হারিয়ে যেতে পারে। ৫০টি জায়গায় ১৮,৬০০টি হিমবাহ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। আরেকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১৯৯০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত গ্রিনল্যান্ডে তাপমাত্রা গড়ে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ হিমবাহ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। সবশেষ ২০২২ সালের এক রিপোর্টে বলা হয়, বিশ্বের তাপমাত্রা এখন প্রাক-শিল্পায়নের যুগের চেয়ে ১.১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়ে গিয়েছে।