
সমুদ্রের রং নাকি নীল ছিলই না! ছোটবেলার সমস্ত বইতে ছবি আঁকতে গিয়ে, এমনকি ছবিতেও দেখেছি সমুদ্র নীল রঙের। আজ হঠাৎ সেই ধারণা বদলের দাবি করে বসলো জাপানের গবেষকরা। তবে কি লাল? হলুদ? না সবুজ? কোনটা?
সমুদ্রের রং সাধারণত নীল মনে হলেও, সম্প্রতি নেচার পত্রিকায় সমুদ্রের জল নীল নয় বরং সবুজ রংয়ের ছিল সেই গবেষণার বিষয়টিই প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় উঠে এসেছে যে আগে সমুদ্রের রং ছিল আলাদা। জাপানের ইও জিমা অঞ্চলে একটি আগ্নেয়গিরি দ্বীপের চারপাশে জলের রং সবুজ দেখেই গবেষণায় নামেন ওখানকার গবেষকরা। গবেষণায় দেখা গেছে, হাজার হাজার বছর আগে যখন পৃথিবীতে স্থলোভাগে প্রাণের সঞ্চার হয়নি তখন সমুদ্রের রং ছিল সবুজ। জলে উদ্ভিদ ও প্রাণীদের আগমন, জলবায়ু পরিবর্তন, জলরসায়ন এবং বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার কারণে জলের রং পরিবর্তন হতে পারে।
সমুদ্রের রং পরিবর্তনের প্রধান কারণ হিসেবে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের উপস্থিতিকেই দায়ী করছেন গবেষকরা। সমুদ্রে এই সবুজ রঙের জলের অস্তিত্ব এমন এক প্রাচীন সময় ছিল যখন পৃথিবীতে অক্সিজেনের প্রয়োজন হত না সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতিতে। উদ্ভিদ প্রাণ ছিল জলেই। যাকে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন বলা হতো। আর এই ফাইটোপ্লাঙ্কটন ক্লোরোফিলের সহযোগে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় বৃদ্ধি পায় এবং লাল এবং নীল রঙের আলো শোষণ করে এবং সবুজ রঙ প্রতিফলিত করে, ফলে সমুদ্রের রং সবুজ দেখায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেও ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় সমুদ্রের রং সবুজ ছিল বলেই ধারণা।
এই গবেষণা সমুদ্রের রং পরিবর্তনের কারণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে নতুন ধারণা প্রদান করে। সমুদ্রের রং পরিবর্তন কেবল একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন নয়, এটি পৃথিবীর পরিবেশগত পরিবর্তনেরও প্রতীক।