ঝরঝর করে হাত থেকে পড়ছে রক্ত, সেই অবস্থাতেই ৩০ ফুট উঁচুতে ঝুলে রইলেন এক ব্যক্তি!
শরতের মরশুমে শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবী জুড়েই এখন উৎসবের মেজাজ। সেই আমেজে আমেরিকার টেক্সাসে আয়োজিত হয়েছে বিখ্যাত পেকান ফেস্টিভ্যাল (Pecan Festival)। টেক্সাসের গ্রোভস শহরের এই উৎসবে চাষবাসের ফসলের আনন্দের সঙ্গে ১৯৬৯ সাল থেকে একটি বিরাট মেলারও আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেই মেলাতে গিয়েই আনন্দের উদযাপন একেবারে বদলে গেল মৃত্যুর মোকাবিলায়।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই উৎসবের একটি ভিডিও। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, মেলার একটি রাইডের ভেতর থেকে বাইরের দিকে মাটি থেকে প্রায় ৩০ ফুট উচ্চতায় ঝুলে রয়েছেন কোনও এক ব্যক্তি! কিন্তু, তিনি ওই জয়রাইডের ভেতর থেকে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছেন কেন?
পেকান ফেস্টিভ্যালে নিজের পরিবারের মানুষদের সঙ্গে যোগ দিতে এসেছিল ১২ বছরের কিশোরী জুলিয়ানা বার্নাল। সে ওই জয়রাইডটিতে একা ওঠে এবং ওঠার সময় কেউই খেয়াল করতে পারেনি যে, রাইডের দরজাটি ঠিকমতো আটকানোই হয়নি। ফলত, ঝাঁকুনি দেওয়ার সময় যদি একটু বেসামাল হয়ে যায়, তাহলেই ছোট্ট মেয়েটি প্রায় ৩০ ফুট উঁচু থেকে সোজা এসে পড়বে একেবারে মাটিতে! মৃত্যু অবধারিত রেখেই সকলের অলক্ষ্যে ভুল হয়ে যায় এবং রাইডটির চলা শুরু হয়ে যায়।
চলার সময় ভেতরে থাকা জুলিয়ানা এবং রাইডের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা এক কর্মী, দুজনেই বুঝতে পারেন যে, সেটির দরজা আটকানো হয়নি। খোলা রয়েছে। জুলিয়ানাকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য তৎক্ষণাৎ মৃত্যুর মুখে নিজে ঝাঁপিয়ে পড়েন ওই কর্মী। মাটি থেকে ৩০ ফুট উঁচু থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তিনি ক্রমাগত দরজাটি আটকানোর চেষ্টা করতে থাকেন। অন্যদিকে, জুলিয়ানার মা তখন মেয়ের প্রাণের ভয়ে একেবারে দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য। রাইডের দায়িত্বে অন্যান্য কর্মীরা বুদ্ধি খাটিয়ে তড়িঘড়ি সেটির গতি কমিয়ে দেন।
বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় রাইডটির ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিতে সক্ষম হন ওই উপকারী কর্মী। পরে তাঁকে এবং জুলিয়ানাকে তৎপরতার সঙ্গে নীচে নামিয়ে আনা হয়। দেখা যায়, দরজা বন্ধ করার চেষ্টা করতে থাকার দরুন রক্তে ভিজে গেছে ওই কর্মীর হাত। জুলিয়ানার মা জানান, কর্মী ৩০ ফুট উচ্চতায় ঝুলে থাকার দরুন জুলিয়ানা ক্রমাগত তাঁকে অনুরোধ করে গেছে, তিনি যেন কিছুতেই পড়ে না যান।