
ভারতীয় পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর তাদের রাজধানী শহর দুবাইয়ের পর্যটকদের জন্য একাধিক সুযোগ নিয়ে আসছে। কারণ গত ১০ বছর ধরে দুবাই পর্যটকদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে রয়েছে। আর সেই কারণেই সেই দেশের সরকার পর্যটকদের নতুন নতুন সুবিধে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে। এবার ভারতীয়ের জন্য আজীবনের জন্য গোল্ডেন ভিসা দেওয়ার কাজ শুরু করেছে দুবাই। রইল এই গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার শর্ত-সহ একধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর অধীনস্থ সাতটি দেশে বসবাস, পড়াশুনা, ব্যবসার জন্য বিদেশিদের ৫-১০ বছরের মেয়াদ বিশিষ্ট ভিসা দেওয়া হয়। এই ধরনের ভিসাকে গোল্ডেন ভিসা বলে। এই ভিসা থাকলে দুবাইয়ে থাকা পড়াশুনা চাকরির ক্ষেত্রে কোনও স্পনশরশিপ দেখাতে হয় না। এজাতীয় ভিসা থাকলে একই পরিবারের ২৫ জন একসঙ্গে দুবাইয়ে প্রবেশ করতে পরবে। স্বাস্থ্য পরিবেশার সঙ্গে নাগরিকদের একাধিক সুবিধেও দেওয়া হয়।
গোল্ডেন ভিসা পাওয়ার নূন্যতম শর্ত ছিল রিয়্যাল এস্টেটে কোনও ভারতীয়কে কমপক্ষে ২০ লক্ষ দিরহাম, ভারতীয় মুদ্রায় ৪ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু নতুন শর্ত অনুযায়ী বর্তমানে আর্থিক মূল্য অনেকটাই কমে ১ লক্ষ দিরহামে নেমে এসেছে। অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ২৩ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। সেই দেশের ব্যবসা আরও বড় করতেই এই বিনিয়োগ করতে হবে। তবে পুরো বিষয়টাই মনোনয়ন নির্ভর। আপাতত প্রথম পর্যায়ে ভারতীয়দের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে। আগামী ৩ মাসে ৫ হাজার ভারতীয় এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা প্রক্রিয়ার দায়িত্ব পেয়েছে রায়াদ গ্রুপ। ভারতে বসেই ভিসার আবেদন করা যাবে। আবেদনকারী সম্পর্কে তথ্য যাচাই করা হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা, অপরাধ সংক্রান্ত ইতিহাস, সমাজমাধ্যমে প্রভাব খুঁটিয়ে দেখা হবে। তবে ভিসা পাওয়ার মূল শর্তই হল, সংস্কৃতি, বৈদেশিক বাণিজ্য, বিজ্ঞান, সামাজিক পরিষেবা- যে কোনও একটি দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কী করে আরব আমিরশাহীর উন্নতি করতে পারবেন। রায়াদ গ্রুপ জানিয়েছে, ভিসা দেওয়ার বিষয়ে সবশেষ সিদ্ধান্ত নেবে আরব আমিরশাহী সরকার।
গোল্ডেন ভিসার অধীনে যে কোনও ব্যক্তি দুবাইয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যেতে পারবেন। দুবাইয়ে ব্যক্তির ব্যবসা, সম্পত্তি বিক্রি বা ভাগ হয়ে গেলে ভিসার মেয়াদে কোনও প্রভাব পড়বে না। আজীবন গোল্ডেন ভিসার মেয়াদ ভারত থেকেই শুরু করছে দুবাই সরকার।
বহু দেশেই এখন আজীবন থাকা ও কাজ করার ভিসা পাওয়ার সুযোগ কমেছে। নেপথ্যে রয়েছে সন্ত্রাসবাদ, জনবিস্ফোরণ, বৈদেশিক নীতি-সহ অজস্র কারণ। তার পরেও এই ধরনের ‘বিশেষ’ ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা নির্ধারক মানদণ্ড হয় অত্যন্ত কঠিন। বিপুল অঙ্কের টাকার প্রশ্নও জড়িয়ে থাকে। সেখানে মাত্র ২৩ লক্ষ টাকায় দুবাইয়ে আজীবনের জন্য সপরিবার থাকা ও উপার্জন করার সুযোগ দেখে অনেকেই উৎসাহী হয়েছে।