নেতাজির প্রিয় তেলেভাজার দোকান, লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের আঁতুড়

  • ভুবনগ্রামটাই বদলে গেলেও একচুলও বদলায়নি নেতাজীর প্রিয় চপের দোকান
  • ১৯১৮ সালে স্টার থিয়েটার থেকে ঢিলছোঁড়া দূরে তৈরি হয় লক্ষ্মী নারায়ণ সাউ
  • ১০০ পেরিয়ে আজও অমলিন অগ্নিযুগের এই সাক্ষী

arka deb | Published : Jul 9, 2019 1:48 PM IST / Updated: Jul 09 2019, 07:21 PM IST

বর্ষার বিকেল বলতে বাঙালি  বোঝে গোল হয়ে বসে ভূতের গল্প অথবা জমাট আড্ডা। এই আড্ডা আলুনি হয়ে যায় যদি হাতে হাতে না ঘোরে চপ মুড়ির বাটি আর চা। আর চপ বললে অবশ্যই তার পীঠস্থান লক্ষ্মীনারায়ণ সাহুর দোকানের কথা আরও একবার স্মরণ করতে হয়। এই সেই দোকান যার চপে মজেছিলেন স্বয়ং নেতাজী। বিশ্বায়নের ধাক্কায় গোটা ভুবনগ্রামটাই বদলে গেলেও একচুলও বদলায়নি নেতাজীর প্রিয় চপের দোকান। শুধু চপের দোকান বললে অবশ্য পুরোটা বলা হয় না। উত্তর কলকাতা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা অগ্নিযুগের অজস্র বিপ্লবী আখড়াগুলিকে জুড়ে রেখেছিল যে সংযোগস্থলগুলি, এটিও তার একটি। আরও একবার পায়ে পায়ে হেঁটে আসা যাক সেই ইতিহাসের পথে।

১৯১৮ সালে স্টার থিয়েটার থেকে ঢিলছোঁড়া দূরে তৈরি হয় এই চপের দোকান। দোকান না বলে গুমটি বলাই ভাল।  ১৯১৮ উত্তর কলকাতার ইতিহাসে একটি প্রণিধানযোগ্য সন। এই বছরই স্বদেশীচেতনায় অনুপ্রাণিত যুবকেরা বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গোৎসবের আয়োজন করছেন। এআইসিসি-র কর্ণধার নিযুক্ত হচ্ছেন নেতাজী সুভাষ।

অন্য খবর পড়ুনঃ নেতাজীকে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মর্যাদা দিতে চায় নতুন সরকার

নেতাজীর ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ তথা খেদু সেদিন স্বদেশিদের পত্রবাহকও হয়েছিলেন। লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ-এর নাতি মোহন কুমার গুপ্ত কথায় কথায় বললেন সেই গল্প। 'নেতাজী যখন স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়তেন তখন বন্ধুদের সঙ্গে আসতেন এই দোকানে।  চলত আড্ডা, বিপ্লবের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা। আমার দাদু স্বদেশীর গোপন চিঠিও হাতবদল করেছিলেন ছিলেন কয়েকবার'। বলাই বাহুল্য ১৯১৮ সালে নেতাজী এই কলেজ থেকেই দর্শন নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হন। শোনা যায় বহু গুপ্ত বৈঠকের খোরাক চপমুড়ি যেত এই দোকান থেকেই। 
আজকের লক্ষ্মী নারয়ণ সাউয়ের ঝাঁ চকচকে দোকানটি তৈরি হয় ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার ঠিক পরের বছর থেকই। নেতাজী নেই, তাতে কি, রয়েছে তার স্মৃতি, সেই স্মৃতিকেই সহায় করে চারপুরুষ ধরে দোকান চালিয়ে আসছেন লক্ষ্মীনারায়ণের পরিবার। বিশ্বায়নের যুগে সাওয়ারমা স্যন্ডুইচ পিৎজায় মজা বাঙালি হাত ছাড়েনি তাঁদের। বাঙালি আজও বিশ্বাস করতে ভালবাসের নেতাজীর স্নেহপ্সর্শ রয়েছে জাতির মাথায়। লক্ষ্মীনারায়ণের পরিবার ২৩ জানুয়ারি বিনে পয়সায় চপ বিলোয়। আসলে তো চপ নয়,  হাতে হাতে আজও বিলি হয় নেতাজীর অনুপ্রেরণা।

Share this article
click me!