বাগুইআটির নাবালকদের খুনের পর অতি সতর্ক হয়ে পালাচ্ছিল সত্যেন্দ্র, কোন ভুল তাকে জড়িয়ে ফেলল পুলিশের ফাঁদে?

প্রাথমিক খবর ও নিহতদের পরিবারের অভিযোগে নাম উঠে আসে সত্যেন্দ্র চৌধুরির। এরেপরই পুলিশ খোঁজ শুরু করে তার।  বাগুইআটির জোড়া খুনের মামলার প্রধান সন্দেহভাজন সত্যেন্দ্র চৌধুরি =কে গ্রেফতার করা কিন্তু নিতান্তই সহজ ছিল না। তার এক মুহূর্তের ভুলে তাকে ধরে ফেলে বিধাননগর থানার পুলিশ।

বাগুইআটির দুই ছাত্রের হত্যাকারী সত্যেন্দ্রকে খুঁজে বের করা একেবারেই সহজ কাজ ছিল না পুলিশের পক্ষে। খুবই সতর্ক ও সাবধানি ছিল এই অপরাধী। জঘন্য অপরাধটি করার পর থেকেই পুলিশ তাকে নিরলসভাবে তাড়া করে চলছিল। কিন্তু অত্যন্ত ধূর্ত সত্যেন্দ্র তদন্তকারী দলের থেকেও আরও এক ধাপ এগিয়ে ছিল। জানা গেছে, ‘লোকেশন’ গোপন রাখতে পারদর্শী সত্যেন্দ্র। ‘লোকেশন’ গোপন রাখতে সে বার বার  সিম বদল করায় তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

গত ২৪ অগস্ট থেকেই সত্যেন্দ্রের খোঁজে লেগে পড়েছিল পুলিশ। কিন্তু সত্যেন্দ্র খুব দ্রুত পালিয়ে যায় এবং তার আসল অবস্থান লুকিয়ে ফেলে। তাকে অনুসন্ধান করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল পুলিশের পক্ষে। এমনকি গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির দুঁদে কর্তারাও অপরাধীকে ধরতে বিভিন্ন সমস্যায় জড়িয়ে পড়ছিলেন। জানা গেছে, গেস্ট হাউস এবং দুই নাবালকের হত্যা করার সময় অপরাধী যে গাড়িটি ব্যবহার করেছিল তার তদন্ত করা শুরু হয়। কিন্তু, অপরাধী সত্যেন্দ্রকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। 

পুলিশ সূত্রে খবর, একেবারে পশ্চিমবঙ্গ থেকেই পালিয়ে যাওয়ার ছক কষেছিল সত্যেন্দ্র চৌধুরী। পরিকল্পনা ছিল, ট্রেনে করে অন্য রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার। সে তার পালানোর পথ হিসেবে হাওড়া স্টেশনকে বেছে নেয়। কিন্তু, পুলিশের তাড়া খেয়ে বাঁচবার জন্য সে সেই সময় তার কছে থাকা সব টাকা হাতখরচা এবং পালাবার চেষ্টায় খরচ করে ফেলে। তাই টিকিট কেনার জন্য তার টাকার প্রয়োজন হয়। আর্থিক সঙ্কটের সময় সে তদন্তকারীদের কাছ থেকে তার অবস্থান লুকানোর জন্য বারবার সিম পরিবর্তন করার কথা ভুলে যায়। বিপদে পড়ে সে তার এক আত্মীয়ের কাছে টাকা চায়। কিন্তু সে জানত না, পুলিশ তার আত্মীয়েরও ফোন ট্র্যাক করে রেখেছে। ফোনে কথা বলার পর তার আত্মীয় তার সাথে অনলাইনে টাকা লেনদেন করে। এই সময় পুলিশ তার অবস্থান খুঁজে পায়। তারা নেটওয়ার্ক টাওয়ারের মাধ্যমে তার অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। যখন পুলিশ হাওড়া স্টেশনে তার অবস্থান খুঁজে পায়, তখনই তড়িঘড়ি বিধাননগর পুলিশের একটি দল সাধারণ পোশাকে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। জানা গেছে সত্যেন্দ্র তখন টিকিট কাটছিলেন। এরপর তাঁকে বিধাননগর কমিশনারেটের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। 

Latest Videos

প্রসঙ্গত বাগুইআটির দুই ছাত্র অতনু দে এবং অভিষেক নস্করকে হত্যার ঘটনায় মূল চক্রী সত্যেন্দ্র চৌধুরী।  জানা যায়, অতনু নিজের বাইক কেনার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল সত্যেন্দ্রকে। সত্যেন্দ্র বাইক দেখানোর নাম করেই তাকে ডেকে পাঠায় ২২ অগস্ট রাতে। অতনু তার সঙ্গে অভিষেককে বাইক দেখাতে নিয়ে যায়। সেই রাতেই তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। ২৩ অগস্ট ন্যাজাট থানা এলাকায় এবং ২৫ অগস্ট হাড়োয়ায় উদ্ধার হয় অতনু এবং অভিষেকের দেহ। মাত্র ৩ সপ্তাহের ভেতরেই পোক্ত অপরাধীকে জালে পুরে ফেলল পুলিশ।  


আরও পড়ুন-
শেষ রক্ষা হল না সত্যেন্দ্র-র, হাওড়া স্টেশনে গ্রেফতার বাগুইআটি জোড়া খুনে সন্দেহজনক মাস্টার মাইন্ড
বাগুইআটিতে নিহত ছাত্রদের বাড়িতে মন্ত্রী সুজিত বসু ও বিধাননগরের সিপি, তদন্তে নামলেন সিআইডি কর্তারাও 
 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘Bangladesh-কে মারতে হবে না চোখ দেখালেই যথেষ্ঠ’ বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Dilip Ghosh | Bangladesh News
Narendra Modi : 'কুয়েত যেন মিনি হিন্দুস্তান', কুয়েত সফরে এসে কেন বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী?
Suvendu Adhikari Live: এগরায় জনসভা শুভেন্দুর, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
Dev Adhikari : এবার কী আসছে খাদান ২? খাদান সাফল্য পেতেই বড়সড় ঘোষণা দেব-যীশুদের
'একটা আস্ত অশিক্ষিত...গোটা রাজ্যটাই জঙ্গিদের হাতে' কড়া বার্তা শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari