গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে শ্রীলেখা মিত্র-র একটি ভিডিও। লকডাউনের সময়ে বাড়ির সামনে পথকুকুরদের খাওয়াচ্ছিলেন তিনি। আর স্রেফ এই কারণেই তিনি মানসিক নির্যাতনের শিকার হন তাঁর প্রতিবেশীদের কাছে। যে ভিডিও-তে তিনি স্পষ্ট অভিযোগ করেন, একা, মহিলা এবং অভিনেত্রী বলেই তাঁকে সহজ নিশানা করে নিয়েছেন বাকি সব ফ্ল্য়াটের মালিকরা।
এক সাক্ষাৎকারে এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে শ্রীলেখা মিত্র জানান, বর্তমানে যে ফ্ল্য়াটে রয়েছেন তিনি, মাসছয়েক আগে সেখানে এসেছেন। তারপর থেকেই তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করে আসছেন ওই ফ্ল্য়াটের বাকিরা। ওই বাড়ি যখন তৈরি হয়, সেই সময় থেকেই সেখানে কিছু কুকুর পথে ঘোরাফেরা করত। নতুন ফ্ল্য়াটে উঠে আসার পর থেকেই তিনি ওঁদের নিয়ম করে খেতে দিতেন। ওঁর কথায়, "কিন্তু সমস্য়া শুরু হল, যখন দুজন কুকুর বাচ্চা দিল। দুজন বাচ্চাই গাড়ি চাপা পড়ে মরে গেল। তারপর থেকেই আমি কুকুরের বাচ্চা হলেই ফ্ল্য়াটের ভেতর একটা জায়গায় এনে নিরাপদে রেখে দিতাম। কিন্তু সেখানেই বাকিদের আপত্তি। রাস্তার কুকুর কেন এতবড় ফ্ল্য়াটে নিয়ে আসা হবে।"
সেই থেকেই শুরু সমস্য়া। শ্রীলেখার অভিযোগ, "তারপর নানা ছুতোনাতায় আমাকে অপদস্ত করার চেষ্টা শুরু হয়। শুনলে অবাক হবেন, ক-দিন আগে কানাঘুঁষো শুনলাম, আমি নাকি এগারোতলা থেকে সিগারেটের কাউন্টার পার্ট ছুড়ে ফেলেছি এমনভাবেই যে, নিচে যিনি হাঁটছেন তাঁর পায়ের ওপর গিয়ে পড়ে। এমনই খারাপ লোক আমি।"
কিন্তু কুকুর কি কাউকে কামড়েছিল? "কাউকেই না", বললেন শ্রীলেখা, "আসলে সমস্য়াটা তো অন্য় জায়গায়।"
কীরকম? শ্রীলেখার উত্তর, " দেখুন সমাজটা তো এখনও তো পুরুষতান্ত্রিকই রয়ে গিয়েছে। তাই আমি একা একজন মহিলা থাকি, তারওপর আবার অভিনেত্রী, তাই আমারা চলনবলন নিয়ে বড় বেশি চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন বাকিরা। আর তাই আমাকে নানাভাবে অপদস্থ করার চেষ্টা হচ্ছে। দেখবেন কুকুর নিয়ে যত-না এঁদের সমস্য়া, তার চেয়েও বেশি সমস্য়া আমি কী পোশাক পরে কুকুরকে খেতে দিচ্ছি রাস্তায় দাঁড়িয়ে। আমি সিগারেট খাই কিনা তা নিয়েও এঁদের বড় মাথাব্য়থা। শুনতে খারাপ লাগলেও কথাটা কিন্তু সত্য়ি, আমার সঙ্গে যদি একজন পুরুষ থাকত, তাহলে কিন্তু সবার অ্য়াটিটিউড পাল্টে যেত।"
এর আগেও শ্রীলেখাকে ট্রোল করা হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। জিজ্ঞেস করলাম, কেন বারবার এত ট্রোলের শিকার হতে হয় বলুন তো? শ্রীলেখার উত্তর, "একে অভিনেত্রী, সিঙ্গল, তারওপর আবার সিগারেট খাই, ট্রোল হতে হবে না। দেখবেন, এই লকডাউনের বাজারে একজন সাংসদ অভিনেত্রী ফেস মাস্ক দিয়ে ছবি পোস্ট করছেন, কেউ-বা রান্নার ছবি দিয়ে পোস্ট করছেন। জনপ্রতিনিধিরা এমন কাজ করলেও তাঁদের ট্রোলড হতে হয় না। অথচ আমাকে হতে হয়।"