বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যান রুখতে সরাসরি অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার। আর অভিযোগ জানানোর জন্য ৫টি ফোন নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি টোল ফ্রি নম্বর।
রাজ্যবাসীর জন্য স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) প্রকল্প শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কিন্তু, শুরু থেকেই একাধিক হাসপাতালে (Hospital) এই কার্ড প্রত্যাখ্যানের খবর পাওয়া যাচ্ছিল। অনেকেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। আগেই ওই হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যসাথী গ্রহণ না করলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স (License) পর্যন্ত বাতিল হতে পারে। আর এবার আরও কড়া পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার (State Government)।
বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যান রুখতে সরাসরি অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার। আর অভিযোগ জানানোর জন্য ৫টি ফোন নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি টোল ফ্রি নম্বর (Toll Free Number)। এছাড়া মোবাইল অ্যাপের (Mobile App) মাধ্যমেও জানানো যাবে অভিযোগ। অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখেবে স্বাস্থ্য কমিশন (Health Commission)। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেই হাসপাতালের বিরুদ্ধে সরকারের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন- উৎসবের মরশুমেই বাড়ছে সংক্রমণ, ১২ নভেম্বর পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে বন্ধ বাজার-দোকান
নবান্নের (Nabanna) তরফে মোট ৪টি ফোন নম্বর ও একটি টোল ফ্রি নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। কোনও হাসপাতাল যদি এই কার্ড গ্রহণ করতে অস্বীকার করে তাহলে এই নম্বরগুলিতে অভিযোগ জানাতে পারবেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। বলা হয়েছে, কার্ডের জন্য যদি কোনও হাসপাতাল রোগী ফিরিয়ে দেয় তাহলে ফোন করুন ১৮০০-৩৪৫-৫৩৮৪ টোল ফ্রি নম্বরে। অর্থাৎ, এই নম্বরটিতে ফোন করতে গেলে কোনও খরচ হবে না। এছাড়াও চারটি হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। সেখানে ফোন করেও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসাথী বিষয়ক সমস্যার অভিযোগ জানাতে পারবেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। এই নম্বরগুলি হল, ৯০৭৩৩১৩২১১, ৯৫১৩১০৮৩৮৩, ৮৩৩৪৯০২৯০০ ও ৯৮৩০১৬৪২৬৮।
আরও পড়ুন- দিওয়ালির আগে সুখবর, অবশেষে হু-এর ছাড়পত্র পেল কোভ্যাক্সিন
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আগেই সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, তাতেও কাজ হয়নি। আগামী সপ্তাহেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানোর ৭টি অভিযোগ শুনবে স্বাস্থ্য কমিশন। আর তার আগেই আরও কড়া পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। অভিযোগ জানানোর জন্য হেল্পলাইন চালু করে নার্সিংহোমগুলির উপর আরও চাপ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- কালীপুজোর আগেই রাজ্যে ফের বাড়ল দৈনিক করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত ১৪
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানোর অভিযোগ সত্যি হলে বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স পর্যন্ত বাতিল হতে পারে। এদিকে নার্সিংহোম মালিকদের দাবি, স্বাস্থ্যসাথীর অধীনে রাজ্য সরকার বিভিন্ন পরিষেবার যে নির্দিষ্ট দর ঠিক করে দিয়েছে তা দিয়ে হাসপাতাল চালানো কোনওভাবেই সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা। রাজ্যের সব মানুষের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকার চিকিৎসা পরিষেবার সুবিধা-সহ এই কার্ডের মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি সব হাসপাতালেই পরিষেবা পাওয়া যাবে বলে নিশ্চিত করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু, তারপরও একাধিকবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও হাসপাতালগুলির উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তার প্রেক্ষিতেই এবার হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার।