রবিবার সকালে বেহালার বকুলতলায় খুন হয়েছিলেন শম্পা চক্রবর্তী নামে এক মহিলা। সেই ঘটনায় মৃতার মেয়ে এবং জামাইকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জেরায় ধৃত মেয়ে, জামাই স্বীকার করল, বেহিসেবি জীবনে বাধা দেওয়াতেই শম্পাদেবীকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। তবে শুধু একা মা নয়, স্বামীর জয়ের সঙ্গে মিলে বাবাকেও খুন করার ছক কষেছিল চক্রবর্তী দম্পতির একমাত্র মেয়ে রিয়া।
ধৃত মেয়ে, জামাইয়ের এই স্বীকারোক্তির পরেই মৃতার স্বামী গোপাল চক্রবর্তীকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। রবিবার সকালে বকুলতলা এলাকায় রাস্তার উপর থেকেই উদ্ধার হয়েছিলে শম্পাদেবীর গলাকাটা দেহ। ধৃত রিয়া এবং জয় চাদরে মুড়িয়ে শম্পাদেবীর দেহ সরানোর সময় তা দেখে ফেলেন এক প্রতিবেশী মহিলা। এর পরেই দেহ ফেলে পালায় দু' জনে। পরে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আটক করে। আটক করা হয় শম্পাদেবীর স্বামীকেও। নিহত মহিলার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় রক্তমাখা ছুরি।
পুলিশ সূত্রে খবর, বছর দেড়েক আগে বাবা- মায়ের অমতেই জয় মণ্ডল নামে বেহালারই বাসিন্দা ওই যুবককে বিয়ে করেছিল রিয়া। বিয়ের পর থেকেই নিয়মিত মদ্যপান করা, গভীর রাতে পার্টিতে যাওয়া শুরু করেছিল রিয়া এবং জয়। যা নিয়ে আপত্তি ছিল শম্পাদেবী এবং তাঁর স্বামীর। নিজেদের বেহিসেবি জীবনযাপনের জন্য মা- বাবার থেকে নিয়মিত টাকাও চাইত দু' জনে। জয়কে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য রিয়াকে ওই দম্পতি চাপ দিতেন। এ সবের জেরে সপ্তাহখানেক আগেই স্বামী জয়ের সঙ্গে মিলে বাবা- মা দু' জনকেই খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় রিয়া। শম্পাদেবী এবং তাঁর স্বামীকে সরিয়ে দিয়ে তাঁদের ফ্ল্যাটটিও দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল রিয়া এবং জয়ের।
জেরায় দু' জনেই স্বীকার করেছে, শনিবার গভীর রাতে জয়কে নিয়ে বাবা- মার ফ্ল্যাটে যায় রিয়া। উদ্দেশ্য ছিল শম্পাদেবী এবং গোপালবাবু, দু' জনকেই খুন করা। কিন্তু সেখানে তখন গোপালবাবু ছিলেন না। প্রথমে শ্বাসরোধ করে এবং তার পরে ছুরি দিয়ে গলা কেটে দু' জন মিলে শম্পাদেবীকে খুন করে। কিন্তু দেহ লোপাট করতে গিয়েই বাঁধে বিপত্তি। আর সেই সূত্রে ধরা পড়ে যায় খুনে মেয়ে- জামাই।