প্রেমিকাকে স্ত্রী-র ফ্ল্যাট দিতে নৃশংস হত্যা, স্বামী-সহ তিনজনকে ফাঁসি

  • নৃশংস এক হত্যাকাণ্ড যা ঘটেছিল ২০১৪ সালে 
  • স্ত্রী-র ফ্ল্যাট প্রেমিকাকে পাইয়ে দিতে এই খুনের ঘটনা
  • স্ত্রী-র দেহ টুকরো-টুকরো করে ফেলে দেওয়া হয় 
  • কুনের অভিযোগে স্বামী ও প্রেমিকা এবং ১ জনকে ধরা হয়েছিল
     

স্ত্রী-কে খুনের জন্য স্বামী ও প্রেমিকাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল শিয়ালদহ আদালত। সেইসঙ্গে আরও একজনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস এই  নির্দেশ দেন। মামলার তদন্তকারী অফিসার অভিজিৎ সাহা জানান, সুরজিত দেব এবং তার বান্ধবী লিপিকা পোদ্দারকে গ্রেফতারের পর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুন, ২০১ নম্বর ধারায় তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং ১২০ বি নম্বর ধারায় ষড়যন্ত্র–এর অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়। সঞ্জয় বিশ্বাস নামে এক প্রতিবেশীর সাহায্যে স্ত্রী জয়ন্তীর দেহ টুকরো টুকরো করেছিল সুরজিত। সেই সঞ্জয়ের বিরুদ্ধেও একই ধারায় চার্জ গঠন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার। 

সোমবার আদালতে দোষীদের সাজা ঘোষণার সময়ে জেলা বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস জানান, এরা যা করেছে তার শাস্তি ফাঁসি ছাড়া আর কিচ্ছু হতেই পারেনা। তারা ঠাণ্ডা মাথায় অত্যন্ত নির্মম ভাবে এই হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারক। সুতরাং ফাঁসি দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি বলে জানিয়ে দেন তিনি। 

Latest Videos

২০১৪ সালের ২০ মে সন্ধ্যা ৬ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ শিয়ালদহ  ভিআইপি পার্কিংয়ে একটি  ট্রলি ব্যাগ এবং একটি বেডিং দীর্ঘক্ষণ ধরে পড়ে থাকতে দেখেন সেখানে নজরদারির দায়িত্বে থাকা রেল পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর অভিজিৎ সাহা। দীর্ঘক্ষণ ওই ট্রলি ব্যাগ ও বেডিংটিকে পড়ে থাকতে দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। এই ট্রলি ব্যাগ ও বেডিং-এর মালিককে আশপাশে দেখতে না পেয়ে সন্দেহ আরও দৃঢ় হয় তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে ট্রলি ব্যাগ ও বেডিংটিকে তুলে নিয়ে যায়।
 
থানায় গিয়ে ট্রলি ব্যাগ ও বেডিংটি খলার সঙ্গে সঙ্গে আঁতকে ওঠেন সকলে। কারণ, ব্যাগটি ভর্তি ছিল এক মহিলার টুকরো টুকরো করে রাখা দেহাংশে।  ট্রলি ব্যাগের সুত্র ধরে তদন্তে নামে পুলিশ। এরপরেই ধীরে ধীরে মহিলার পরিচয় থেকে শুরু করে সমস্ত তথ্য হাতে আস্তে থাকে পুলিশের। জানা যায় মৃত মহিলার নাম জয়ন্তী দেব। তিনি লেকটাউনের ‘এ’ব্লকের বাসিন্দা ছিলেন। পুলিশ এও জানতে পারে মৃতার স্বামী সুরজিত একটি বহুজাতিক সংস্থার কর্মী। স্বামীর অন্য মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি স্ত্রী ফলে আলাদাই থাকতেন তারা। জয়ন্তী লেকটাউনের ফ্ল্যাটে থাকলেও সুরজিত থাকেন বিরাটিতে।
 
দীর্ঘ চার বছর আলাদাই থাকতেন তারা। এর মধ্যেই স্ত্রীর ফ্ল্যাট প্রেমিকাকে পাইয়ে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র সুরজিত এঁটেছিল- তদন্তে তাও জানতে পারে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে যে ষড়যন্ত্র করেই স্ত্রী-কে খুনের পরিকল্পনা এঁটেছিল সুরজিত। পরিকল্পনা মাফিক, ২০১৪ সালের ১৯ মে রাতে জয়ন্তীকে ফোন করে বিরাটিতে ডেকে পাঠায় সুরজিত। তার পরে গভীর রাতে প্রথমে পিলসুজ দিয়ে মাথায় আঘাত করে জয়ন্তীকে। সে বেহুঁশ হয়ে গেলে, লিপিকা আসে সেখানে। এর পরে লিপিকা ও সুরজিৎ দু'জনে মিলে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করে জয়ন্তীকে। সুরজিত এর পরে প্রতিবেশী সঞ্জয় বিশ্বাসকে ডেকে আনে। সঞ্জয় এসে সবজি কাটার বঁটি দিয়ে জয়ন্তীর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে।  দেহের টুকরোগুলি ট্রলি ব্যাগ এবং একটি বেডিং-এ ভরা হয়।  দেহাংশ ভরা সেই ট্রলি ব্যাগ এবং  বেডিংটি তার পরে সুরজিত ও লিপি রেখে আসে  শিয়ালদহ স্টেশনের পার্কিংয়ে। কিন্তু, কথাতেই আছে অপরাধী কোথাও না কোথাও সূত্র ফেলে যায়। আর সেই সূত্র ছিল নতুন কেনা ট্রলি ব্যাগ। যা সুরজিত ও তার প্রেমিকা লিপি এবং ভাড়াতে অপরাধী সঞ্জয়কে পুলিশের জালে ধরিয়ে দেয়।  

Share this article
click me!

Latest Videos

WB By Election: ‘Madarihat-এ যেই ফলাফলটা হয়েছে সেটা প্রত্যাশিত নয়!’ এ কী বললেন Samik Bhattacharya
গান্ধীমূর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন থেকে Guyana সংসদে ভাষণ, এক ঝলকে দেখুন প্রধানমন্ত্রীর (Modi) গায়ানা সফর
ভোটে জিততেই RG Kar সাজানো ঘটনা বলছেন তৃণমূল, একহাত নিলেন Adhir Ranjan Chowdhury
WB By Election Result: Naihati-তে সবুজ ঝড়! এক ধাক্কায় এগিয়ে TMC! উল্লাসের আমেজ গোটা এলাকায়
খেলতে খেলতেই ঘটলো অঘটন! শোকের ছায়া Shantipur-এ, দেখুন | Nadia News Today