ডেঙ্গু নিয়ে মমতার সরকারের সঙ্গে আদায়-কাঁচকলায়, অবসরের চারমাস আগেও বদলি চিকিৎসক

Published : Feb 04, 2020, 01:58 PM ISTUpdated : Feb 04, 2020, 02:07 PM IST
ডেঙ্গু নিয়ে মমতার সরকারের সঙ্গে আদায়-কাঁচকলায়, অবসরের চারমাস আগেও বদলি চিকিৎসক

সংক্ষিপ্ত

সরকারি হাসপাতালের অব্য়বস্থার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন চিকিৎসক ডেঙ্গুকে অজানা জ্বল লিখতে রাজি হননি তিনি অভিযোগ, প্রতিহিংসায় তাঁকে অবসরের চারমাস আগে বদলি করে দেওয়া হল অরুণাচল দত্তচৌধুরীকে বদলি করা হয়েছে কালিম্পঙে, ঘটনায় ক্ষুব্ধ চিকিৎসকমহল

তাঁর 'অপরাধ' ছিল তিনি ডেঙ্গুর সময়ে সরকারি অব্য়বস্থার বিরুদ্ধে মুখ খুলে ফেসবুকে নিজের একটি লেখা পোস্ট করেছিলেন। আর সেই অপরাধে তাঁকে প্রথমে সাসপেনশনে পাঠানো হয়। তারপর, ২৮ মাস পরেও যখন কোনও অভিযোগ প্রমাণ করা যায় না তাঁর বিরুদ্ধে, তখন সেই সাসপেনশন তুলে নিয়ে তাঁকে সুদূর কালিম্পঙে বদলি করা হয়। অবসরের মাত্র ৪ মাস আগে!

চিকিৎসক অরুণাচল দত্তচৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজ্য় সরকার কার্যত প্রতিহিংসাপরাণ হয়ে উঠেছে বলেই মনে করছে  অ্য়াসোসিয়েশন ফর হেলথ সার্ভিস ডক্টরস। তাদের অভিযোগ,  নইলে অবসর গ্রহণের মাত্র চারমাস আগে তাঁকে এভাবে কালিম্পঙে বদলি করে দিত না স্বাস্থ্য় দফতর।

কী ঘটেছিল?

২০১৭ সালে  তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্ট করেছিলেন অরুণাচল। অভিযোগ, তখন ডেঙ্গুতে কারোর মৃত্য়ু হলে, সব জেনেশুনেও সরকারি চাপে  ডেথ সার্টিফিকেটে 'অজানা জ্বর' লিখতে বাধ্য় হচ্ছিলেন চিকিৎসকরা। ডেঙ্গু তখন ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল রাজ্য়ে। সরকারি হাসপাতালগুলো তখন অপর্যাপ্ত পরিকাঠামো নিয়ে শয়ে-শয়ে ডেঙ্গু রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে নবান্নে বসে মুখ্য়মন্ত্রী দাবি করেছিলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ফলে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছিলেন না। এমনকি, বেসরকারি হাসপাতালগুলোও তখন রোগীদের নিয়ে ধন্দে পড়েছিল। যার ফল ভুগতে হচ্ছিল সাধারণ মানুষকে। এই পরিস্থিতিতে কার্যত রুখে দাঁড়ান বারাসত জেলা হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরুণাচল দত্ত চৌধুরী। তিনি তাঁর ফেসবুকে একটি লেখা পোস্ট করেন। যেখানে সরকারি স্বাস্থ্য় ব্য়বস্থার দৈনদশা আর সেইসঙ্গে চিকিৎসকদের অসহায়তার কথা ফুটে ওঠে।

অরুণাচল-এর ওই পোস্টে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয় স্বাস্থ্য় দফতর। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে সাসপেনশনে পাঠায় তারা। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণ করার জন্য় আস্ত একটি তদন্ত কমিটিও তৈরি করা হয়। তারপর কেটে যায় ২৮ মাস। এতদিনেও অরুণাচল দত্তচৌধুরীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ  প্রমাণ করতে না-পেরে সম্প্রতি সেই সাসপেনশন তুলে নিতে বাধ্য় হয় স্বাস্থ্য় দফতর। কিন্তু এতেই শেষ হয় না প্রতিহিংসার পালা। সাসপেনশন তুলে নেওয়ার পর, তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয় সুদূর কালিম্পঙে। অবসর নেওয়ার আর মাত্র চারমাস বাকি  এই চিকিৎসকের। তাঁর বৃদ্ধ বাবা অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  মেডিকেল কলেজের উজ্জ্বল ছাত্র অরুণাচল দত্তচৌধুরীর এই পরিণতি দেখে  অন্য় চিকিৎসকরা প্রশ্ন তুলেছেন, এবার থেকে তো আর কোনও ডাক্তার সরকারি হাসপাতালে যোগ দিতেই চাইবেন না। চেস্ট মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক  চন্দন ঘোষের কথায়, "আসলে মুখ্য়মন্ত্রী বলেছিলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক, আর উনি বলেছিলেন স্বাভাবিক নয়। তাই এই প্রতিহিংসা।"   যদিও বিষয়টি নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্বাস্থ্য়ভবনের কর্তারা।

PREV
click me!

Recommended Stories

'ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাবোই, এটা বাবরের দেশ নয়', কলকাতায় এসে হুঙ্কার ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী
Gita Path : 'মুখ্যমন্ত্রী না এসে প্রমাণ করলেন প্রকৃত হিন্দু নন' তোপ শুভেন্দু অধিকারীর