এমন ভুল আর করবে না তাঁদের পরিবারের ছেলেরা। ঊষশী সেনগুপ্তের কাছে আপাতত এটাই আবেদন তাঁর নিগ্রহে অভিযুক্ত যুবকদের বাবা-মায়েদের। প্রয়োজন ঊষশীর কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতেও রাজি তাঁরা।
সোমবার গভীর রাতে প্রথমে এক্সাইড মোড় এবং পরে প্রিন্স আনওয়ার শাহ রোডে কয়েকজন যুবকের হাতে নিগৃহীত হন প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া ঊষশী সেনগুপ্ত। তিনি যে অ্যাপ ক্যাবে বাড়ি ফিরছিলেন সেটির চালককেও মারধর করে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ভিডিও রেকর্ডিং করায় ঊষশীর মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। প্রথমে তৎপর না হলেও এই ঘটনায় পড়ে পুলিশ অভিযুক্ত সাত যুবককে গ্রেফতার করে।
আরও পড়ুন- অন্য থানায় যান, বিপদের মুহূর্তে পুলিশের ভূমিকায় পাঁচ প্রশ্ন ক্ষুব্ধ উষশীর
এ দিন তাঁদেরকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। সেখানেই অভিযুক্তদের ক্ষমা করে দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য ঊষশীর উদ্দেশে আবেদন করেন অভিযুক্ত যুবকদের বাবা- মায়েরা। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত প্রত্যেকেরই বয়স আঠারো থেকে বাইশের মধ্যে। তাঁরা ঊষশীকে কোনও নিগ্রহও করেননি। যে অ্যাপ ক্যাবে ঊষশীরা আসছিলেন সেটির চালকের সঙ্গে বচসা এবং সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে বলেই দাবি অভিযুক্তদের পরিবারের। ধৃতদের মধ্যে অন্যতম শেখ ওয়াসিমের মা হাজরা বিবি ঊষশী সেনগুপ্তের কাছে কাতর আবেদন করে বলেন, 'আমাদের ছেলে ভুল করে ফেলেছে। ওদের জীবনটা নষ্ট হতে দেবেন না। ওদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এই মামলাটা দয়া করে তুলে নিন। আর কখনও এমন ভুল হবেনা। আমরা আপনার কাছে গিয়ে দরকার হলে দেখা করে ক্ষমা চেয়ে নেব।'
আর এক অভিযুক্ত শেখ গনির বাবা জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনওয়ার শাহ রোডের কাছে ঊষশীর পাশের পাড়ার বাসিন্দা। যদিও তারা ঊষশীকে চিনত না। তাঁর দাবি, সোমবার এক বন্ধুর জন্মদিনে পাড়ার মোড়ে কেক কেটে বিরিয়ানি খেতে যায় ওই যুবকরা। অভিযোগ, ঊষশী যে অ্যাপ ক্যাবটিতে ছিল, সেই গাড়িটিই ওই যুবকদের একজনের বাইকে ধাক্কা মারে। সেই কারণেই এক্সাইড মোড়ে গিয়ে ওই অ্যাপ ক্যাবটিকে থামায় ওই যুবকরা। অভিযুক্ত শেখ গনির বাবার অবশ্য দাবি, ঊষশী থানায় যেতেই সেখান থেকে চলে আসে ওই যুবকরা। পরে বাড়িতে ফেরার সময় প্রিন্স আনওয়ার শাহ রোডে ওই ক্যাবটিকে দেখতে পেয়ে ক্ষতিপূরণ হিসেবে চালকের থেকে টাকা দাবি করা হয়। তখন দু' পক্ষে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হলেও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যরা।
শেখ গনির বাবা বলেন, 'সবাই কলেজে পড়ে, প্রত্যেকেই বেকার। ফলে ভবিষ্যতের কথা ভেবে ওদের ক্ষমা করে দেন ঊষশী ম্যাাডাম।' তাঁর আরও দাবি, ঊষশীর সঙ্গে কোনওরকম অভব্যতা করেনি তাঁর ছেলে এবং তার বন্ধুরা।
অভিযুক্তদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগও আনা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে ৩২৩, ৩২৪ এবং ৩৫৪ ধারায় মামলা করা হয়েছে।