কলকাতাতেই শিক্ষককে বেদম মার, দাবি 'জয় শ্রীরাম' বলতে হবে, মুখ খুললেন শাহরুফ

  • ঝাড়খণ্ডে ১৮ ঘণ্টা ঝাড়খণ্ড থেকে খুব বেশি দূরে নেই কলকাতাও
  • রামভক্তরা খাস কলকাতা শহরেই ট্রেনে উঠে মেরেছে শিক্ষক শাহরুফ হালদারকে
  • পিটিয়ে মারা হয়েছিল এক মুসলমান যুবককে

arka deb | Published : Jun 25, 2019 8:24 AM IST / Updated: Jun 25 2019, 03:22 PM IST


ঝাড়খণ্ডে ১৮ ঘণ্টা পিটিয়ে মারা হয়েছিল এক মুসলমান যুবককে। রামভক্তদের দাবি ছিল, 'জয় শ্রীরাম' বলতে হবে। বলেও অবশ্য পার পায়নি সেই যুবক।  ঝাড়খণ্ড থেকে খুব বেশি দূরে নেই কলকাতাও। রামভক্তরা খাস কলকাতা শহরেই ট্রেনে উঠে মেরেছে শিক্ষক শাহরুফ হালদারকে। দাবি ওই এক, বলতে হবে জয় শ্রীরাম। রইল শাহরুফের জবানবন্দি। 

শাহরুফ আপনার পেশা কী? 

আমি পেশায় শিক্ষক। হুগলি জেলার হিয়াদপুর গ্রামের একটি মাদ্রাসায় আরবি পড়াই। 

সেদিন ঠিক কী হয়েছিল? 

সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। আমি ক্যানিং থেকে ১২টা ৫ মিনিটের ট্রেনে উঠেছিলান। সেদিন হিন্দু সংহতির মিছিল ছিল ক্যানিং-এ। তালডি, বেদবেরিয়া, ক্যানিং থেকে এই মিছিলের অংশগ্রহণকারীরা ট্রেনে ওঠে। ঢাকুরিয়ায় আমাদের কম্পার্টমেন্টের লোকজন শুনতে পায় পিছনের কম্পার্টমেন্টে গোলমাল হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই কুড়ি বাইশ জনের দলটি আমাদের কামরায় আসে। এসেই আমাকে ধরে তারা। প্রশ্ন করে, 'টুপি কেন পরেছিস, দাড়ি কেন রেখেছিস'। আমাকে বলে, 'বল জয় শ্রীরাম'। আমি উত্তর দেওয়ার আগেই মারধর শুরু হয়। চোখে ঘুষি মারার পরে আমার আর শরীরে জোর ছিল না। পার্কসার্কাস স্টেশনের কাছে ট্রেনের ডেইলি প্যাসেঞ্জাররা আমায় তুলে নামিয়ে নিতে চায়। কিন্তু যারা মারছিল তারা আমায় কিছুতেই নামতে দিচ্ছিল না। আমার জামাকাপড় সমস্ত ছিঁড়ে যায়। স্টেশন ঢুকতে তারা আমার কোমরে লাথি মারে। আমি হুমড়ি খেয়ে পড়ি প্লাটফর্মে।

পার্কসার্কাসে কী হল?

পার্কসার্কাসে নামার পরে স্থানীয় দোকানদার ও ট্রেনযাত্রীরা আমায় তুলে নিয়ে আমার মাথায় পানি দেয়। আমাকে স্থানীয় ডাক্তারখানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা হয় সেখানেই। আমি তাদেরকেই সবটা বলি।

আর পুলিশ?

ওই স্থানীয় লোকজনই আমাকে নিয়ে যায় থানায়। আমি সেখানে সবটা বলি। পুলিশ শোনে।

পুলিশ কি এফআইআর নিয়েছিল? 

জানি না। সে সময় শরীরে এসব ভাবার মত শরীরে জোর ছিল না।

পুলিশ কি লিখিত কোনও অভিযোগপত্রে স্ট্যাম্প মেরে আপনাকে দেয়?

না।

আপনি এর পরে থানায় যোগাযোগ করেছেন?

না করিনি।

আপনার শরীর এখন কেমন আছে?

আমার চিকিৎসা চলছে। চোখে এখনও রক্ত জমে আছে। তবে গায়ে ব্যথাটা অনেকটা কমেছে

আপনি কী চান এখন শাহরুফ?

আমি চাই এইরকম অশান্তি যেন আমাদের এখানে আর না হয়। যেন শান্তি ফেরে। আর কেউ যেন এভাবে আক্রান্ত না হয়।
 
কলকাতা শহরের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের হয়ে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি শাহরুফ।    

Share this article
click me!