জয়প্রকাশের তৃণমূলের যোগদান নিয়ে সুকান্ত বলেন, "ওনাকে দল সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করেছিল। এই দলে তো ছিলেন না। তাই এরপর কোন দলে যাবেন সেটা একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। মানুষকে কেউ ধরে রাখতে পারে না। এর আগে তো কংগ্রেস করেছিলেন। তারপর বিজেপিতে এসেছিলেন। আবার বিজেপি থেকে তৃণমূলে গেলেন। এটা নতুন কোনও বড় ব্যাপার নয়।"
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূলে যোগ (TMC Join) দিয়েছেন বিজেপি (BJP) নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার (Jay Prakash Majumdar)। সোমবারই লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee) দেখা করেছিলেন তাঁর সঙ্গে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সায়ন্তন বসু ও রিতেশ তিওয়ারিও। কিন্তু, সেই বৈঠকও যে একেবারেই ফলপ্রসূ হয়নি তা স্পষ্ট আজ জয়প্রকাশের তৃণমূলে যোগ (Jay Prakash Joins TMC) দেওয়ার পরে। অবশ্য আজ শুধু তৃণমূলে যোগই দেননি তিনি, তার সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে গিয়েছেন সহ-সভাপতির পদও। আর তাঁর এই যোগদানকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
জয়প্রকাশের তৃণমূলের যোগদান নিয়ে সুকান্ত বলেন, "ওনাকে দল সাময়িকভাবে সাসপেন্ড (Suspend) করেছিল। এই দলে তো ছিলেন না। তাই এরপর কোন দলে যাবেন সেটা একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। মানুষকে কেউ ধরে রাখতে পারে না। এর আগে তো কংগ্রেস করেছিলেন। তারপর বিজেপিতে এসেছিলেন। আবার বিজেপি থেকে তৃণমূলে গেলেন। এটা নতুন কোনও বড় ব্যাপার নয়। এরপর আরও কোনও দল পরিবর্তন করবেন।"
আরও পড়ুন- পদ্ম-মোহ ত্যাগ করে এবার জোড়া ফুলে জয়প্রকাশ, এসেই পেলেন সহ-সভাপতির পদ
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য রাজনীতির ছবিটা ছিল একেবারে অন্যরকম। কারণ সেই সময় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রায় প্রতিদিনই কেউ কেউ যোগ দিচ্ছিলেন বিজেপিতে। সেই সময় তৃণমূলের একাধিক প্রথম সারির নেতা গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। অবশ্য বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরই বদলে যায় সেই ছবি। আবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরেন অনেকেই। এই মুহূর্তে তীব্র ভাঙন দেখা যাচ্ছে বিজেপির অন্দরে। আর এবার দল ছাড়লেন জয়প্রকাশও। এ প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, "যুদ্ধ জিততে গেলে শৃঙ্খলাবদ্ধ সৈনিকের প্রয়োজন। যে সেনা নিয়ম মেনে চলে না সে যুদ্ধে কাজে আসে না। দল পরিবর্তন, বৈঠক সেটা তাঁদের বিষয় সেই বিষয়ে তাঁরা বলবেন। দলের ভিতরে সমস্যা থাকলে তা নিয়ে কথা বলার অধিকার সকলের রয়েছে। বাকি দলের বাইরে যা হবে সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। দল এর জন্য উত্তর দেবে না।"
শুরুটা হয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে। সায়ন্তন বসুকে (Sayantan Basu) সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করেছিল বিজেপি। তখনই দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন জয়প্রকাশ। এরপর একাধিকবার তিনি নানাভাবে দলকে বুঝিয়েছেন তাঁর বিরোধিতার কথা। কখনও টুইট করে আবার কখনও রাজ্যপাল ও রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতের প্রসঙ্গে রাজ্যের হয়ে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আবার কখনও দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে পিকনিকেও অংশ নিয়েছিলেন। তবে সেটা একবার নয় একাধিকবার। তারপর থেকেই তাঁর সঙ্গে দলের একটু একটু করে দূরত্ব বাড়ছিল।
বিজেপি থেকে জয়প্রকাশকে সাসপেন্ডও করা হয়েছিল। তারপর থেকেই তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে একের পর এক সুর চড়াতে শুরু করেন। তখনই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল জয়প্রকাশের তৃণমূলে যোগ দেওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। আর ঠিক সেই সময় বুঝেই দলবদল করলেন তিনি। অবশ্য শুধু দলে যোগ দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি, তার সঙ্গে সঙ্গেই পেয়ে গিয়েছেন রাজ্যের সহ সভাপতির পদ। এদিকে আজ দলবদলের হ্যাট্রিক হল। ২০১৪ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তিনি বিজেপিতে গিয়েছিলেন। এবার তিনি গেলেন তৃণমূলে। অবশ্য তিনি যখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তখন বাংলায় ধুঁকছিল কংগ্রেস। আর এখন রাজ্যে টালমাটাল অবস্থা বিজেপির। আর ঠিক সেই সময়তেই ফুল বদল করলেন তিনি।