নিজস্ব প্রতিনিধি: শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে বলছেন, জেএনইউয়ের ঘটনা তাঁকে ২৬/১১-র কথা মনে করিয়ে দিল। আর প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনীরা বলছেন, এই ঘটনা তাঁদের ১২/৪-এর কথা মনে করিয়ে দিল।
কী ঘটেছিল সেদিন?
১২ এপ্রিল ২০১৩। কিছুদিন আগেই দিল্লিতে এসএফআই ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে ঘিরে। তার জেরে রাজধানীত যথেষ্ট বিড়ম্বনায় পড়েছে তৃণমূল। অভিযোগ, এরই বদলা নিতে ১২ এপ্রিল ছুড়ি, লাঠি আর টাঙ্গি হাতে শাসকদলের শ-খানেক দুষ্কৃতী তৃণমূলের পতাকা নিয়ে পুলিশের চোখের সামনেই প্রেসিডেন্সিতে ঢুকে দু-দফায় হামলা চালায়। যার জেরে রীতিমতো জখম হয়ে হাসপাতালে যেতে হয় বেশ কিছু পড়ুয়াকে। দুষ্কৃতীরা শেষ অবধি মেন বিল্ডিংয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে প্রতিহত করেন পড়ুয়ারা।
সেদিনের ঘটনা এদিন মনে করেছেন প্রেসিডেন্সির বেশ কিছু প্রাক্তনী। নাম না-করে এক প্রাক্তনী এদিন স্পষ্টই বললেন, "আসলে স্বার্থে আঘাত লাগলে কেউই ছেড়ে কথা বলে না। সেদিন এরাজ্যের শাসকদলের গুণ্ডারা প্রকাশ্যে দলের পতাকা হাতে নিয়ে হামলা চালায় আমাদের ওপর। কারণ, তার কিছুদিন এসএফআইয়ের তরফে দিল্লিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বলতে গেলে তারই শোধ তুলতে সেদিন নির্লজ্জ হামলা চালায় শাসকদলের গুণ্ডাবাহিনী।"
অভিযোগ, দুপুর দেড়টার সময়ে স্লোগান দিতে দিতে তৃণমূলের পতাকা হাতে একদল লোক ঢুকে পড়ে প্রেসিডেন্সিতে। মুখে অশ্লীল ভাষা, "রেপ করে দেবো।" তারপর পড়ুয়াদের এক-এক করে জামার কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে চলতে থাকে এলোপাথাড়ি মার। একেবারে পুলিশের চোখের সামনেই। এরপর দ্বিতীয় দফায় তারা দুপুর তিনটের সময়ে আরও একবার হামলা চালায় বলে অভিযোগ। যদিও মেন বিল্ডিংয়ে ঢোকার আগেই তাদের প্রতিরোধ করেন পড়ুয়ারা।
রবিবার জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপির সদস্যরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। যার জেরে ছাত্রসংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ গুরুতর আহত হন। হামলাকারীদের হাত থেকে রেহাই পান না অধ্যাপিকা সুচরিতা সেনও। দুজনকেই এইমসে ভরতি করতে হয়। ঐশীর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে একেবারে অপরিচিত বহিরাগতরা জড় হচ্ছে বলে পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও তারা আমল দেয়নি। অভিযোগ, সেদিনের প্রেসিডেন্সির হামলার সময়েও কিন্তু পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়ে পাননি সেখানকার পড়ুয়ারা।
সোশাল মিডিয়ায় জেএনইউয়ের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন নেটিজেনরা। সেইসঙ্গে তাঁদের কেউ কেউ প্রেসিডেন্সিতে ৭বছর আগের ওই হামলার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে এ রাজ্যের শাসকদলকে।