বুধবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়ারা সরাসরিই স্লোগান তুললেন, 'ভারত মাতা সে আজাদি'। ভেতরে তখন চলছিল একটি আলোচনা সভা, 'অ্য়াওকেনিং ভারতমাতা'। যাতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য়সভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত ও বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্য়ুৎ চক্রবর্তী। পড়ুয়াদের অভিযোগ ছিল, সম্প্রতি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়াদের ওপর যেভাবে চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী, তাতে সরাসরি প্রশ্রয় ছিল উপাচার্য ও বিজেপি সাংসদের।
বুধবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে যখন আলোচনা চলছিল, তখন বাইরে জড়ো হতে থাকেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়ারা। ওঁদের সঙ্গে যোগ দেন কলকাতা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের কিছু পড়ুয়াও। শুরু হয় বিক্ষোভ। চলতে থাকে স্লোগান, 'ভারত মাতা সে আজাদি', 'কাশ্মীর মাঙ্গে আজাদি', 'আসাম মাঙ্গে আজাদি'। প্রতিবাদীদের সঙ্গে ছিল একটি লম্বা ব্য়ানার। যাতে লেখা ছিল, 'হিন্দুরাষ্ট্র ইজ রেপিস্ট'।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয় একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। যাতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বলার জন্য় আমন্ত্রিত হন বিজেপির রাজ্য়সভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। ওই সভাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিশ্ববিদ্য়ালয়ের কিছু পড়ুয়া। যার ফলে কার্যত পণ্ড হয় ওই আলোচনা সভা। এর কিছুদিনের মধ্যেই পড়ুয়াদের হোস্টেলে ঢুকে মারধর করে কিছু দুষ্কৃতী। যাদের কেউ কেউ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে সদ্য় এবিভিপিতে যোগ দিয়েছে। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, সেদিন বিজেপির সাংসদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর কারণেই পড়়ুয়াদের ওপর চড়াও হয় এবিভিপির সদস্য়রা। যাতে নাকি প্রচ্ছন্ন মদত ছিল খোদ উপাচার্যের।
এদিকে, বুধবার ভিক্টোরিয়ায় যাদবপুরের পড়ুয়াদের এই স্লোগান কিন্তু রীতিমতো সমালোচিত হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তো শাহিনবাগেও বিক্ষোভ চলছে। গোটা দেশজুড়েই পড়ুয়ারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কই, সেখানে 'ভারত মাতা সে আজাদি'র মতো কোনও স্লোগান তো কখনও শোনা যায়নি। প্রশ্ন উঠেছে, গেরুয়াপন্থীদের উগ্র জাতীয়তাবাদ যেমন খারাপ, ঠিক তেমনই নিজের দেশের থেকে আজাদি চাওয়াও কি নিন্দনীয় নয়? তাছাড়া 'হিন্দুরাষ্ট্র রেপিস্ট' বলার মধ্য়ে দিয়ে কি নিজের দেশকেই ধর্ষক বলে অপমান করা হয় না?