শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলারগুলির শুনানির পর তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশের উপরই ভরসা রেখেছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৪ মে।
প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যে কোনও না কোনও নারী নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসছে। আর এবার পিংলা, শান্তিনিকেতন, নেত্রা, নামখানা, ময়নাগুড়ি-সহ রাজ্যের মোট ৯ টি ধর্ষণ মামলার তদন্তের জন্য এখন রাজ্য পুলিশের উপরই ভরসা রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের তরফে আদালতে আজ রিপোর্ট ও কেস ডায়েরি জমা দেওয়া হয়। এরপর প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলারগুলির শুনানির পর তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশের উপরই ভরসা রেখেছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৪ মে। পাশাপাশি গ্রামের রাস্তায় আলোর কী অবস্থা রয়েছে তা নিয়েও রাজ্যের কাছে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করেছে আদালত।
নেত্রার তদন্ত রিপোর্ট সম্পর্কে আদালতের পর্যবেক্ষণ, ওই রিপোর্টে পরস্পরবিরোধী কথা রয়েছে। অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এর জন্য দুঃখপ্রকাশও করেন। বিজেপির আইনজীবী দাবি করেন, নির্যাতিতার পরিবারকে অবিলম্বে জেলা লিগ্যাল এইড অথোরিটির মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। আদালতের নির্দেশ, দু সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে ওই সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এদিকে আজ রাজ্যের তরফে রিপোর্ট পেশ করার পরই তার উপর ভিত্তি করে বেশ কিছু প্রশ্নও তোলা হয় আদালতের তরফে। সব কিছু শোনার পর রাজ্য পুলিশের তদন্তেই ভরসা রেখেছে আদালত।
আরও পড়ুন- '২০৩৬ সাল অবধি বাংলা মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতা, তারপর শপথ নেবেন অভিষেক', জানালেন কুণাল
শুনানির সময় নামখানার তদন্ত রিপোর্ট সম্পর্কে এজি জানান, দময়ন্তী সেন আদালতের নির্দেশে এই তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছেন। ফরেনসিক রিপোর্ট আসতে সময় লাগছে। তাই দেরি হচ্ছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। এরপর শান্তিনিকেতনের আদিবাসী ধর্ষণের রিপোর্ট সম্পর্কে এজি জানান, ১৬৪ ধারা অনুযায়ী গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। কেস ডায়রিতে সব উল্লেখ আছে। এ প্রসঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ বলে, 'আপনি তো সব রিপোর্টেই একই কথা বলছেন। তাহলে সব নির্যাতিতার ক্ষেত্রেই কী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে?' জবাবে এজি জানান, জেলা লিগ্যাল এইড অথোরিটি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে অতি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন, 'বার্নল নিয়ে বসুন ভাই', বিজেপিকে নিয়ে বেফাঁস বলতেই শুভেন্দুকে খোঁচা কুণালের
এদিকে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনার জেরে গ্রামের রাস্তায় আলোর ব্যবস্থার জন্য আবেদন করা হয়েছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। কারণ, এখনও পর্যন্ত একাধিক জায়গাতেই পর্যাপ্ত আলো নেই। ফলে সেখানে দুষ্কৃতীরা অনেক সময়ই সুযোগের অপেক্ষায় বসে থাকতে পারে। অনেক সময় চুরির জন্য অন্ধকারকেই বেছে নেয় তারা। ফলে তাদের চিহ্নিত করাও সম্ভব হয় না। মামলায় বলা হয়েছিল, অন্ধকারের কারণে বাড়ছে অসামাজিক কাজ, যৌন নির্যাতনের মতো ঘটনা। তার পরিপ্রেক্ষিতে গোটা রাজ্যে গ্রামের পথে-ঘাটে আলোর কী অবস্থা তা জানতে চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এনিয়ে রাজ্যকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, কোথায় কত আলোর প্রয়োজন তার সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় প্রশাসন। তাদের থেকে রিপোর্ট নিয়ে গোটা রাজ্যের পরিস্থিতি জানাবে রাজ্য।
আরও পড়ুন, শুভেন্দু বসায় ভেঙে পড়েছিল খাট, ময়নাগুড়ির নির্যাতিতার পরিবারকে নতুন করে কিনে দিল তৃণমূল