শহরে বিগত কয়েকদিনে বেশ কিছু জায়গায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা খুনের ঘটনা ঘটেছে। ফাঁকা বাড়িতে একা পেয়ে খুন করে সম্পত্তি লুঠের ঘটনায় বেশ আতঙ্কেই দিন কাটান বৃদ্ধরা। সম্প্রতি নেতাজিগরের ফাঁকা বাড়িতে নিঃসন্তান বৃদ্ধ দম্পতির ঘটনায় যেন ত্রস্ত শহরের একা বসবাসকারী বৃদ্ধবৃদ্ধারা। এই ঘটনার পরে টনক নড়েছে প্রশাসনেরও।
প্রবীণদের সাহায্যের জন্য রয়েছে প্রণাম প্রকল্প। এই প্রকল্প সম্পর্কে এখনও ওয়াকিবহল নয় অনেকেই। এই প্রকল্পকেই আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রবীণদের সাহায্যের জন্য ১০০-র সঙ্গে আরও একটি হেল্পলাইন নম্বরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৯৮৩০০৮৮৮৪-এই নম্বরে ফোন করলেই তৎপর সাহায্য পাবেন প্রবীণরা। জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ বাড়িতেই খুন নিঃসন্তান বৃদ্ধ দম্পতি, খুনের পিছনে কি প্রোমোটিং চক্র
তবে এখানেই শেষ নয়। আজকাল বহু বৃদ্ধ বৃদ্ধাই একা থাকেন, যাঁদের ছেলেমেয়েরা হয়তো শহরের বাইরে পড়াশোনা বা কাজ করেন। তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে এই প্রকল্পে। প্রবীণদের নিরাপত্তা নিয়ে আজ পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা বৈঠক করেন।
প্রবীণদের নিরাপত্তার জন্য 'প্রণাম' প্রকল্পে কী কী থাকছে-
১)যে প্রবীণরা সম্পূর্ণ একা থাকেন তাঁদের জন্য একটি ডেটাবেস তৈরি করা হবে।
২) প্রবীণ নাগরিকদের জন্য প্রতিটি থানা এলাকায় বিট কনস্টেবল নিয়োগ করা হবে।
৩) প্রত্যেক প্রবীণের বাড়িতে ১৫ দিন অন্তর থানা থেকে পুলিশ কনস্টেবল গিয়ে দেখা করবেন। প্রবীণদের সুবিধা অসুবিধা বোঝার চেষ্টা করবেন তাঁরা।
৪) বয়স্ক নাগরিকদের বাড়িতে নিয়মিতে কাদের যাতায়াত রয়েছে সে বিষয়ে নজর দেবে পুলিশ। এছাড়া মাঝে মধ্যে কোনও মিস্ত্রী বা গ্যাস সার্ভিসিং-এর লোকও আসলে তাও নথিভুক্ত করবে পুলিশ। এই ব্যক্তিদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য নিজেদের কাছে রাখবে পুলিশ।
৫) প্রত্যেক প্রবীণ নাগরিকের বাড়িতে সিকিওরিটি অডিট হবে। প্রত্যেকের বাড়ির দরজা, জানলা, সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক আছে কি না দেখা হবে।
৬) এলাকায় কারও সঙ্গে কোনও বিবাদ বচসা রয়েছে কি না সে বিষয়েও খোঁজ খবর নেবে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, এলাকায় ৬৫ বছরের প্রবীণরা ফর্ম ফিলআপ করে প্রণাম প্রকল্পের সদস্য হলে তবেই তাঁদের দেখভাল করবে পুলিশ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অনেকেই এই প্রকল্প সম্পর্কে জানেন না বা নিজে থেকে ফর্ম ফিল আপ করার শারীরিক সামর্থ নেই। সেক্ষেত্রে পুলিশকে নিজে উদ্যোগ নিয়ে পৌঁছে যেতে হবে প্রবীণ নাগরিকদের দ্বারে।