২৩ হাজার অভিযোগের কিনারা, কলকাতার নগরপালকে ধন্যবাদ লন্ডন পুলিশের

  • ভুয়ো কলসেন্টার খুলে প্রতারণার কারবার চলছিল কলকাতা
  • প্রতারকদের নিশানায় ছিলেন লন্ডনের বাসিন্দারা
  • লন্ডন পুলিশের কাছে ২৩ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছিল
  • সেই অপরাধের কিনারা করলেন লালবাজারের সাইবার ক্রাইম বিভাগের কর্তারা

Asianet News Bangla | Published : Oct 27, 2019 7:51 AM IST

পুজোর সময়ে শহরের রাস্তায় ভিড় সামলানোর কলকাতার পুলিশের জুড়ি মেলা ভার। অপরাধ দমনেও কিন্তু লালবাজারের দড় কম নয়! প্রায় ২৩ হাজার প্রতারণার অভিযোগের কিনারা করে এবার  লন্ডন পুলিশের প্রশংসা আদায় করে নিলেন কলকাতার পুলিশের আধিকারিকরা। পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন লন্ডনের ন্যাশনাল ফ্রড অ্যান্ড সাইবার ক্রাইম-এর ডিরেক্টর জোনাথন ফ্রস্ট।

ঘটনাটি ঠিক কী?  ভুয়ো কলসেন্টার খুলে প্রতারণার রমরমিয়ে প্রতারণার কারবার চলছিল কলকাতায়। তবে এদেশের বা এ রাজ্যের নয়, প্রতারকদের নিশানা করেছিলেন লন্ডনের বাসিন্দাদের।  তেইশ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছিল লন্ডন পুলিশের কাছে। কিন্তু  প্রতারকদের নাগাল পেতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, কলকাতায় বসে একটি নামী তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার নাম করে লন্ডনের বাসিন্দাদের ফোন করত অভিযুক্তেরা।  কারিগরি সহায়তা টোপ দিয়ে বিদেশিদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিত  ভিশন কল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড ও উইজার্ড ই মার্কেটিং প্রাইভেট লিমিটেড-এর স্বঘোষিত কর্মীরা।  আর কারগরি সহায়তা নিতে রাজি না হলে, আবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত।  লন্ডন পুলিশের কাছেই শুধু নয়, যে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার নাম করে প্রতারণা কারবার চলত, সেই সংস্থার দপ্তরের অভিযোগ  জানিয়েছিলেন প্রতারিতরা।  গত ১৬ অক্টোবর কলকাতা পুলিশের সাইবার বিভাগের অভিযোগ জানান ওই নামী তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার আইনজীবী। সূত্রের খবর, স্রেফ ওই দুটি ভুয়ো সংস্থার অফিস কলকাতায়, এর বেশি পুলিশকে আর কোনও তথ্য দিতে পারেননি  অভিযোগকারী।  তদন্তে নামেন কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধ বিভাগের আধিকারিকরা। 

প্রযুক্তির সাহায্যে ও সোর্স মারফৎ  রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের বাটা মোড়ের কাছে একটি কলসেন্টারের হদিশ পান কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এই কলসেন্টার থেকেই  ভিশন কল সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার নাম করে ফোন করা হত লন্ডনে।  গ্রেফতার করা হয় ৪ জনকে। ধরা পড়ে মুদাসসার মেহমুদ ও ওই ভুয়ো সংস্থার 'ডিরেক্টর' জোয়েব তালাত, 'টিম লিডার'  খালিদ সুলতান ও 'সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর' সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়। ধৃতদের কাছ থেকে ম্যাকবুক, হার্ড ডিস্ক, মোবাইল-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা।  এদিকে  উইজার্ড ই মার্কেটিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে অপর ভুয়ো সংস্থার সন্ধান মেলে তপসিয়ায়। তপসিয়া রোডে (সাউথ) একটি কলসেন্টারে অভিযান চালিয়ে ওই সংস্থার মালিক তথা ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ বানথিয়া, আইটি হেড ইশফাক আহমেদ ও রিজওয়ান আলিকে গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের সাইবার বিভাগের আধিকারিকরা।  বাজেয়াপ্ত করা হয় হার্ড ডিস্ক, পেন ড্রাইভ-সহ বেশ কিছু নথি।  এভাবেই লন্ডন পুলিশ যে অভিযোগের কিনারা করতে হিমশিম খাচ্ছিল, সেই ঘটনায় অভিযুক্তেরা সকলেই  ধরা পড়ে যায় কলকাতায়। 
 

Share this article
click me!