আমফানের ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে কদিন আগেই প্রকাশ্য়ে এসেছিল রাজীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ও অরূপ রায় সংঘাত। হাওড়ায় বেশকিছু নেতাকে ত্রাণ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে সরিয়ে দেন মন্ত্রী অরূপ রায়। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে অরূপ রায়ের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, প্রকৃত দুর্নীতিগ্রস্ত রাঘব বোয়লদের আড়াল করা হচ্ছে। যদিও সে যাত্রায় পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথায় আর বাড়েনি সংঘাত। এবার রাজীবকে কাছে টেনে অরূপ রায়কেই হাওড়ার জেলা সভাপতি পদে থেকে সরিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী।
উল্টে দলের রাজ্য় কমিটিতে আনা হয়েছে রাজীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে। স্বাভাবিকভাবেই দলের এই সিদ্ধান্তে খুশির হাওয়া রাজীব শিবিরে। যদিও রাজ্য় রাজনৈতিক মহল বলছে, ২১শের আগে নবীনেই ভরসা রাখলেন দলনেত্রী। সম্প্রতি একুশের মঞ্চেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দলের রদবদলের। দলের ভার্চুয়াল সভায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আগামী দিনে প্রবীণদের পাশাপাশি নবীনদের সামনে আনতে চান তৃণমূল নেত্রী। সেই জল্পনাই সত্য়ি হল। দলের রদবদল করে খোল নলচে বদলে দিলেন মমতা।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে আনা হল ছত্রধর মাহাতোকে। পাশাপাশি ঝাড়গ্রামের তৃণমূল জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুলাল মূর্মূকে।
রদবদলের হিসেব বলছে, পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শান্তিরাম মাহাতোকে। তাঁর জায়গায় জেলা সভাপতি হয়েছেন গুরুপদ টুডু। ঝাড়গ্রামে বীরবাহা সোরেনকে সরিয়ে আনা হয়েছে দুলাল মূর্মূকে। একই সঙ্গে বাঁকুড়া জেলা সভাপতি পদে নিয়োগ করা হয়েছে শ্যামল সাঁতরাকে। মূলত, জঙ্গলমহলের ভোটবাক্সের কথা মাথায় রেখেই ছত্রধর মাহাতো, সুকুমার হাঁসদা ও চূড়ামণি মাহাতোকে রাজ্য কমিটিতে আনল তৃণমূল।
যা খবর পাওয়া গিয়েছে, তাতে হাওড়়ার জেলা (শহর) সভাপতির পদ থেকে সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর জায়গায় হাওড়া জেলায় দু’জনকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। শহর হাওড়া তৃণমূলের সভাপতি করা হয় লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে। অন্যদিকে গ্রামীণ হাওড়ার সভাপতি করা হয়েছে পুলক রায়কে। একই সঙ্গে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে নদিয়া জেলার সভাপতি করা হল। সেই পদে আগে আসীন ছিলেন গৌরী দত্ত।
সূত্রের খবর, কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি হয়েছেন পার্থপ্রতীম রায়। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে আনা হয়েছে রাজ্য কমিটিতে। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অর্পিতা ঘোষকে। তবে সব থেকে অবাক করার বিষয় রাজ্যের কোর কমিটিতে আনা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। ২১শের সভা থেকে এই নামটাই প্রায় শোনা যায়নি তৃণমূল নেত্রীর মুখে।