পা পিছলে কুয়োয় পড়ে গেলেন যুবক। কিন্তু সাত ঘণ্টা ধরে চেষ্টা চালিয়েও কুয়ো থেকে যুবককে উদ্ধার করতে পারল না দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এই ঘটনা ঘিরেই প্রবল চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রোণী এলাকায়। দমকলের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ পরিবারকে বোঝাতে ঘটনাস্থলে গেলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার সকাল থেকেই ফের উদ্ধারকাজ শুরু হবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ স্নান করতে গিয়ে কুয়োয় পড়ে যান বাঁশদ্রোণীর সোনালি পার্ক এলাকার বাসিন্দা বাপি সরকার (৩০)। ওই যুবকের পরিবারের দাবি, স্নান করার সময় কোনওভাবে পা পিছলে কুয়োয় পড়ে যান বাপি। ওই যুবকের মৃগী রোগ ছিল বলে পরে জানায় পুলিশ।
খবর পেয়ে প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ। এর পর দ্রুত সেখানে পৌঁছয় দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কিন্তু উদ্ধারকাজ শুরু হলেও দীর্ঘক্ষণ খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ যুবকের। ডুবুরি নামানো হলেও প্রথম দু' বার কুয়োর মধ্যে তাঁরা নিখোঁজ যুবকের কোনও হদিশ পাননি। দমকলের তরফে জানানো হয়, ওই কুয়োটি প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ ফুট গভীর। জল ছেঁচে বের করা হলেও দ্রুত তা ফের ভরে যাচ্ছে। একে প্রবল ঠান্ডা, তার উপর কুয়োর গভীরে বিষাক্ত গ্যাসের দাপটে বেশিক্ষণ কাজও করতে পারছিলেন না ডুবুরিরা।
তৃতীয়বারের চেষ্টায় কুয়োর নীচে বাপির দেহের খোঁজ পান ডুবুরিরা। এর পর দড়ি বেঁধে তা তোলার চেষ্টা হলেও দড়ি ছিঁড়ে ফের দেহ কুয়োর মধ্যে পড়ে যায়। দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, যেখানে দেহটি আটকে রয়েছে, কুয়োর একেবারে নীচের সেই অংশ অত্যন্ত সংকীর্ণ। সেখানে মাত্র দেড় ফুট ব্যসার্ধ রয়েছে। ফলে ডুবুরিরা নেমে দেহে দড়িও বাঁধতে পারছেন না। শেষ পর্যন্ত রাত দশটার পরে দমকলের পক্ষ থেকে উদ্ধারকাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফের শনিবার সকাল থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করার কথা জানায় দমকল।
এই খবর শুনেই ক্ষোভে ফেঁটে পড়ে নিখোঁজ যুবকের পরিবার। তাদের অভিযোগ, ঠিকমতো উদ্ধারকাজ চালায়নি দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ক্ষুব্ধ পরিজনদের বোঝাতে ঘটনাস্থলে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং দুই তৃণমূল কাউন্সিলর।
দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, যুবকের দেহ যেখানে আটকে রয়েছে, হয় সেই অংশ ভেঙে নয় তো কুয়োর পাশে সমান্তরাল একটি সুড়ঙ্গে খুঁড়ে দেহ উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। তবে তা যে যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন দমকল আধিকারিকরা।