ভোজনরসিক বাঙালি ভাল খাবারের স্বাদে অনেক দূর অবধি যেতে পারে। কিন্তু খাবারের দোকানগুলির কি তা আর জানতে বাকী আছে। তাই পেটুক বাঙালির কাছেই গুপি-বাঘার মত তারাও খাবারের প্লেট সাজিয়ে রেডি। শুধু খেয়ে ভ্য়ানিশ করার দায়িত্ব নিজের। আর এই মুহূর্তে শহরে, এমন কিছু রেস্তরা বা খাবারে দোকান আছে, যেগুলি তৈরি হয়েছে স্বাধীনতারও আগে। তাই দোকানগুলির সঙ্গে একটা সুন্দর ইতিহাসও লুকিয়ে আছে।
১. সবার আগে যে নামটা সবার মনে আসবে, সেটা হল কফি হাউজ। শহরের সবচেয়ে পুরোনো জায়গার মধ্য়ে এটি অন্য়তম। একদিকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্য়ালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্য়ালয় এবং মেডিক্য়াল কলেজ। অপর দিকে হিন্দু থেকে হেয়ার একের পর এক স্কুল। এখানে একটাসময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্য়জিত রায়, মান্না দে, রবি শঙ্কর, অমর্ত সেন সব বিখ্য়াত ব্য়াক্তিত্বরাই এসেছেন। তাই বিশ্ববিদ্য়ালয়ের পড়ুয়ারা এখানে কফি খাওয়া সঙ্গে আড্ডা মারার ঐতিজ্য়টা এখানও বজিয়ে রেখেছে।
২. প্য়ারামাউন্ট সরবতের দোকানও কলকাতার অন্য়তম ঐতিজ্য়। এই দোকানটিও স্বাধীনতার আগে থেকেই কলেজস্ট্রিটে স্বমহিমায় বিরাজমান। এখানে বিপ্লবিরা আসতেন ঠান্ডা সরবতে গলা ভেজাতে ও তার সঙ্গে দেশকে স্বাধীন করার জন্য় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সেরে নিতে। সুভাষ চন্দ্র বোস থেকে শুরু করে বাঘাযতীন , প্রায় সব বিপ্লবীরাই এসে এখানের বিখ্য়াত ডাব সরবত খেয়ে তেষ্টা মিটিয়েছেন।
৩. কলকাতার আরও একটি বিখ্য়াত খাবারের জায়গা হল, ফ্লুরিজ । ১৯২৭ সালে পার্কস্টিটে, এই দোকানটি তৈরি করেন ফ্লুরি দম্পতি। আর এখানে প্রাতরাশের স্বাদ নিতে কে না এসেছেন। স্বয়ং সত্য়জিত রায়, প্রতি রবিবার এখানে প্রাতরাশ সারতে আসতেন।
৪. কলকাতা কাটি রোলসের জন্য় বিখ্য়াত হল, নিজাম রেষ্টুরেন্ট। ১৯৩২ সালে রাজা হাসান সাহেব এই দোকানের প্রতিষ্ঠা করেন। নিজামের কাবাব রোলের নাম শুনলে এখনও সবার জিভে জল আসে। শতাব্দি প্রাচীন এই দোকানটিও তাই কলকাতাবাসীর অন্য়তম পছন্দ।