মিছিলে ধর্ষিতার নাম থাকায় 'অসভ্য় বিজেপি', তাপসী মালিকের নাম প্রকাশ করেছিলেন কে

  • কুমারগঞ্জ গণধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে বিজেপির মিছিলে ধর্ষিতার নাম
  • সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যা করতে পারে না কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন
  •  যে কারণে বিজেপিকে অসভ্য়ের দল বলে মন্তব্য়  করেছে তণমূল
  • সিঙ্গুরে তাপসী মালিকের নাম প্রকাশ করেছিল এই তৃণমূলই

Tapas Dutta | Published : Jan 11, 2020 10:07 AM IST


কুমারগঞ্জ গণধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে বিজেপির মিছিলে দেখা গিয়েছে ধর্ষিতার নাম। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যা করতে পারে না কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন। যে কারণে বিজেপিকে অসভ্য়ের দল বলে মন্তব্য়  করেছে তণমূল। রাজ্য় রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, বিজেপি অসভ্য হলে তৃণমূলও 'ধোয়ো তুলসীপাতা' নয়। কারণ সিঙ্গুরে নির্যাতিতা তাপসী মালিককে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ এনেছিল এই তৃণমূলই। সেক্ষেত্রেও প্রকাশ করা হয়েছিল নির্যাতিতার নাম।  

কুমারগঞ্জ গণধর্ষণকাণ্ডে প্রতিবাদে শুক্রবার কলকাতায় নন্দন থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপির মহিলা ও যুব মোর্চা। প্রথমে মিছিলের অনুমতি না পেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় গেরুয়াশিবির। শেষপর্যন্ত আদালতের নির্দেশে নন্দন চত্বরে বিকল্প পথে মিছিল হয়। মিছিলে হাঁটেন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পল-সহ দলের প্রথমসারির নেতা-নেত্রীরা।

কিন্তু সেখানে গোল বাঁধে একটি ব্য়ানারকে কেন্দ্র করে। মূল ব্য়ানারে না থাকলেও, মিছিলে বেশ কয়েকটি ফ্লেক্সে প্রকাশ্যেই কুমারগঞ্জ গণধর্ষণকাণ্ডের নির্যাতিতার নাম লেখা ছিল। যা নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছে বিরোধীরা। বিজেপিকে 'অসভ্যের দল' বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, কোনও সভ্য দল এমন কাজ করে না।  সিপিএমের এক নেতার কটাক্ষ, একমাত্র বিজেপির মতো অশিক্ষিত দলই এই কাণ্ড ঘটাতে পারে। যদিও বিজেপি নেত্রী  লকেট চট্টোপাধ্য়ায় জানান, বিজেপির  তরফে এই কাজ কেউ করেননি। কিছু অতি উৎসাহী মানুষজন ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এই কাজ  করেছেন।

যদিও রাজ্য় রাজনাতির  ইতিহাস বলছে, কদিন আগে তাপসী মালিকের বার্ষিকী  পালন  করেছে তৃণমূল। সিঙ্গুরে শহিদ বেদীতে মালা দিয়ে প্রতি বছর তাপসী মালিককে শ্রদ্ধার্ঘ্য় জ্ঞাপন করেন তৃণমূলের নেতারা। ২০০৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর কাকভোরে সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া গ্রামের মাছ বিক্রেতা মনোরঞ্জন মালিকের মেয়ে তাপসীর দগ্ধ দেহ মেলে তৎকালীন টাটার অধিকৃত জমিতে। সেই সময় সিঙ্গুর কৃষি জমি রক্ষা কমিটির আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তাপসী। ১৩ বছর পরও মেয়ের খুনিরা সাজা পেল না। শহিদ বেদির সামনে ছলছল চোখে আক্ষেপ করেছিলেন তাঁর বাবা। মনোরঞ্জনের আক্ষেপ,পুরো বিষয়টি দিদি জানেন , তা  সত্ত্বেও কেসটা কোর্টে উঠছে না। কেন উঠছে না তা  দিদিই ভালো বলতে পারবেন।

সেই সময় তাপসী মালিক ধর্ষণ ও খুনে সিপিএম কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।  সারা রাজ্যে প্রভূত আলোড়ন সৃষ্টি করে এই ঘটনা । তৎকালীন বাম সরকার সিবিআই-কে তদন্তের ভার দেয় । গ্রেফতার হন সিপিএম নেতা সহ কয়েকজন । পরে তাঁরা জামিনে ছাড়া পান । ওই দিনের পর থেকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নির্দেশে প্রতি বছর এই দিনটি বিশেষ ভাবে পালন করে তৃণমূল। নিয়ম বলছে,  ধর্ষিতার জীবতকালে বা মৃত্যু ঘটলেও নির্যাতিতার নাম প্রকাশ করা যায় না। অন্তত তেমনই নির্দেশ রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। কিন্তু সেই নির্দেশ বা গাউডলাইন মানছে কে? 

Share this article
click me!