সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র বিরোধিতায় রাজ্য জুড়ে তাণ্ডবের জেরে মোট ৮৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়ে এমনই দাবি করল রেল কর্তৃপক্ষ। মামলার পরবর্তী শুনানি চার সপ্তাহ পরে।
গত ১১ ডিসেম্বর সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হয়ে যাওয়ার পরেই প্রবল বিক্ষোভ শুরু রাজ্য জুড়ে। বেনজির তাণ্ডব চলে গোটা বাংলায়। আক্রমণকারীদের লক্ষ্য হয়ে ওঠে রেল স্টেশন, ট্রেন- সহ রেলের সম্পত্তি নষ্ট করা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পরের পর ট্রেনে হামলা চালানো হয়। নষ্ট করে দেওয়া হয় রেল লাইন সহ ট্রেন চালানোর যাবতীয় পরিকাঠামো। মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো রাজ্যে একাধিক স্টেশনে ভাঙচুর করে এমনকী প্ল্যাটফর্ম, ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি বিক্ষোভের জেরে প্রচুর ট্রেন চলাচলই করতে পারেনি। রেল পথে কলকাতার সঙ্গে উত্তরবঙ্গ এবং উত্তর পূর্ব ভারতের যোগাযোগ দীর্ঘদিন ধরে ব্যাহত হয়।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ আরও এক মন্ত্রীর বক্তব্যে প্ররোচিত হয়েই এই তাণ্ডব চলে বলেই কলকাতা হাইকোর্টে বেশ কয়েকটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাগুলিই একত্রিত করে শুনছে প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণণ এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতিই শুক্রবার রেলকে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছিলেন।
শুক্রবার রিপোর্ট দিয়ে পূর্ব রেল জানায় হাওড়া, মালদহ ও শিয়ালদহ ডিভিশন মিলিয়ে ৭২ কোটি টাকার উপর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ তাণ্ডবকারীদের বিক্ষোভের জেরে বেশ কয়েকজন রেল অফিসারও অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। আর দক্ষিণ পূর্ব রেল জানিয়েছে, খড়্গপুর ডিভিশনের উলুবেড়িয়া, ফুলেশ্বর,চেঙ্গাইল, সাঁকরাইল সহ একাধিক স্টেশনে প্রায় ১২ কোটি ৭৫ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অন্যতম জনস্বার্থ মামলাকারী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য ডিভিশন বেঞ্চের সামনে দাবি করেন, তাণ্ডবকারীদের থেকেই ক্ষতপূরণ আদায় করা হোক। যদিও আদালত তাতে আমল দেয়নি। রেলের তরফে অবশ্য রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বেশ কয়েরজন তাণ্ডবকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।