একসময় কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড পরিচতি ছিল মেয়রের এলাকা বলে। কিন্তু, গত কয়েক বছরে বদলে গিয়েছে সেই পরিস্থিতি। মেয়র পদ অনেক দিন আগেই ছেড়ে দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
পুরভোটকে (KMC Election) কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরেই কলকাতায় (Kolkata) উত্তেজনার পারদ ঊর্ধ্বমুখী ছিল। আর মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফলাফলকে (KMC Election Result) কেন্দ্র করে সেই পারদ আরও চড়ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার হয়ে যায় ট্রেন্ড। ভোট গণনা শুরু হতেই প্রাথমিক ট্রেন্ডে বিরোধীদের অনেকটা পিছনে ফেলে এগিয়ে থাকতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসকে (TMC)। গণনার প্রথম রাউন্ড থেকেই এগিয়ে ছিলেন বেহালার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের (Ward 131) প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায় (Ratna Chatterjee)। সেই তখন থেকেই জয়ের বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন তিনি। আর গণনা শেষ হওয়ার পরও শেষ হাসি হাসেন শোভন ঘরনী রত্না।
একসময় কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড পরিচিত ছিল মেয়রের এলাকা বলে। কিন্তু, গত কয়েক বছরে বদলে গিয়েছে সেই পরিস্থিতি। মেয়র পদ অনেক দিন আগেই ছেড়ে দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)। এমনকী, তিনি আর বেহালাতেও নেই। আর তাঁর ছেড়ে যাওয়া সেই পদেই এবার তৃণমূলের তরফে টিকিট দেওয়া হয়েছিল তাঁর স্ত্রী রত্নাকে। তবে নিজের স্বামী, বাবা ও মা বিধায়ক হলেও রত্না নিজে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু, শোভন বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে ওই ওয়ার্ডের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন রত্না। তবে এই কয়েক বছরে নিজের জায়গাটা আরও বেশি করে পরিপক্ক করে তুলেছিলেন তিনি। আর সেই কারণে প্রথম লড়াইতেই বাজিমাত করলেন।
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের থেকে প্রায় চার হাজারের বেশি ভোটে জিতলেন রত্না। গণনার প্রথম রাউন্ড থেকেই অবশ্য জেতার বিষয়ে সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। আর ফল প্রকাশের পরও শেষ হাসি হাসলেন। জয়ের পর রত্না বলেন, “শোভনবাবুর থেকে বেশি ভোটে জিতলাম। ১৩১ ওয়ার্ডের মানুষ আমাকে বিশ্বাস করেছেন। ২০১৫ সালে শোভন চট্টোপাধ্যায় ৬ হাজার ২০০ ভোটে জিতেছিল। সেখানে আমি ১০ হাজার ২০৬ ভোটে জিতেছি। এটা মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা। গত চার বছরে আমি ওঁদের পাশে ছিলাম। এবার একটা দিন ওঁরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি আজ ভীষণ খুশি। ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড, যেখানে আমার বাড়ি, সেটা আমার নিজের দখলে রাখতে পারলাম।”
এই ওয়ার্ডটি মেয়রের ওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত হলেও এটিকে তৃণমূলের গড় বললেও ভুল হয় না। ২০০৫ সাল থেকেই এই ওয়ার্ডের দখল রয়েছে তৃণমূলের হাতে। তৎকালীন সময়ে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন শোভা ঘোষ। ২০১০ সালে কাউন্সিলর হন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তারপর ২০১৫ সালেও দ্বিতীয় বারের কাউন্সিলর তিনি। টানা এই ওয়ার্ডে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখেছে ঘাসফুল শিবির। আর এবারও সেই ওয়ার্ডের দখল থাকল তৃণমূলের হাতেই।