চোখের সামনে ভেঙে পড়ছে তিনতলা বাড়ি। কোনওটা আবার বিপজ্জনকভাবে হেলে রয়েছে। বিপদ মাথায় নিয়েই বাড়ি বা তার মধ্যে থাকা দোকানে ঢুকে মূল্যবান জিনিস নিয়ে আসতে মরিয়া বাসিন্দারা। কিন্তু পুলিশ সেই অনুমতি দিচ্ছে না। বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেন জুড়ে এখন শুধুই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে হাহাকার শোনা যাচ্ছে।
এ দিন সকালেই দুর্গা পিতুরি লেনের মধ্যে হেলে পড়া একটি বহুতল ভেঙে পড়ে। ১৩এ নম্বর ওই বাড়িটি রবিবার থেকেই হেলে ছিল। ওই বাড়ির কাছেই আরও একটি বাড়ি একইরকম বিপজ্জনক ভাবে হেলে রয়েছে। ফলে সেই বাড়িটিও যখন তখন হেলে পড়তে পারে। কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়ে এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। যদিও, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা ঝুঁকি নিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি বা দোকানের মধ্যে ঢুকে নিজেদের মূল্যবান জিনিস বের করে আনতে চান।
আরও পড়ুন- বউবাজারে মুখ্যমন্ত্রী, রাজনীতি না করে মেট্রোকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি মমতার
চোখের সামনে বাড়ি ভেঙে পড়তে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকেই। কারণ ওই বাড়ির নীচে সোনার গয়নার কারখানা এবং দোকানও ছিল। বাড়ি ভেঙে পড়ায় বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী এবং কর্মীরা।
অন্যদিকে মেট্রো কর্তৃপক্ষও এখন কীভাবে এই ধাক্কা সামলে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়. সেই সমাধান সূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালের মাঝামাঝি হাওড়া থেকে সল্টলেক পর্যন্ত পুরো রুটে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বউবাজারে বিপত্তির পরে সেই সময়সীমা আরও পিছোতে পারে। আপাতত কীভাবে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে জল ঢোকা বন্ধ করে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সেই পথই খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তবে আপাতত সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকছে।
অন্যদিকে এ দিনই দুপুরে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনায় বসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে থাকবেন কলকাতার মেয়র এবং পুলিশ কমিশনারও। কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে, তা নিয়েও ওই বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা। সোমবারই এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।