মায়ানমারে ফিরলে মৃত্য়ু নিশ্চিত। ভারতে থাকতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন রোহিঙ্গা দম্পতি। বিষয়টি মানবিকতার সঙ্গে দেখার আবেদন জানালেন তাঁরা।
বেআইনিভাবে রাজ্যে অনুপ্রবেশের দায়ে খুব তাড়াতাড়ি জেল খাটার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে তাদের। দেশের কথা ভাবলেই গা সিউড়ে উঠছে। সেকারণে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে আর্জি জানিয়েছেন এক রোহিঙ্গা দম্পতি। যার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই দম্পতিকে মায়ানমারে ফেরত পাঠানো যাবে না বলে নির্দেশ দেন তিনি। আদালত বলেছে, সংশোধনাগারে থাকাকালীন মানবিকতার খাতিরে তাদের প্রাপ্য যেন দেওয়া হয়। এছাড়াও আইনজীবীদের সঙ্গেও যেন সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হয় তাদের, তা নিশ্চিত করতে বলেছে কোর্ট।
'ব্যাঁকা এবং ন্যাকা', রাজ্যপালকে আক্রমণ করতে গিয়েই কি সীমা ছাড়ালেন মমতা
মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা উৎখাত হবার পর আন্তর্জাতিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। মায়ানমার সরকারকে বহু সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়। কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আদি সুকুর এবং তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম নামে এক রোহিঙ্গা দম্পতি দু'বছর আগে উত্তর ২৪ পরগণা দিয়ে এ রাজ্যে প্রবেশের সময় ধরা পড়ে যায়৷ বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে দু'বছরের সাজা হয় তাদের।
বর্তমানে তারা দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দী রয়েছে। কিছুদিন পর সংশোধনাগার থেকে তাদের ছাড়া পাবার কথা। ছাড়া পেলে তাদের ফের মায়ানমার ফিরতে হবে ভেবে আতঙ্কে রয়েছেন। সেখানে আর ফিরতে চায় না বলে হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছে দম্পতি। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর এজলাসে তাদের আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ দে বলেন, মায়ানমার থেকে উৎখাত হয়েই তারা পালিয়ে এসে এ রাজ্যে প্রবেশ করতে চেয়েছিল। ফের তাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠানো হলে তা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার সমান হবে৷ মানবিকতার খাতিরে আদালত তাই বিষয়টি বিবেচনা করুক। রাজ্যের তরফে ছিলেন আইনজীবী অর্ক কুমার নাগ। তিনি বলেন, 'সরকারের কাছ থেকে এবিষয়ে বক্তব্য জেনে এসে আদালতকে জানাবো।'
বিরোধী কণ্ঠও শোনা যায়, মমতাকে বার্তা দিয়ে যাদবপুরে দৃষ্টান্ত স্থাপন ধনখড়ের
বিচারপতি কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দম্পতিকে মায়ানমার পাঠানো যাবে না। কেন্দ্রকে মামলায় পক্ষভুক্ত করতে বলেছে আদালত। ওই দম্পতি সম্পর্কে কেন্দ্র ও রাজ্যের কি বক্তব্য এবং দুই সরকারের কাছেই এদের নিয়ে কিকি তথ্য রয়েছে আদালতের কাছে তা বিশদে জানাতে হবে আগামী ৮ জানুয়ারি। মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ২০ জানুয়ারি।