দোকানের বয়স ১০২ বছর। স্বয়ং নেতাজি এসে তেলেভাজা খেয়ে গিয়েছেন এই দোকান থেকে। আর তাই গত ৭৮ বছর ধরে নেতাজির জন্মদিনে কয়েক হাজার লোককে তেলেভাজা খাইয়ে আসছে কলকাতার এই দোকান। সকাল থেকে সন্ধে অবধি। একেবারে বিনামূল্য়ে।
উত্তর কলকাতার হাতিবাগানে লক্ষ্মীনারায়ণ সাউয়ের দোকানে অবশ্য় সারাবছরই ভিড় লেগে থাকে। শহরজুড়ে দাপটের সঙ্গে, একটা গোটা শতাব্দীজুড়ে তেলেভাজার রাজ্য়ে রাজত্ব করে চলেছে এই দোকান। স্কটিস চার্চ স্কুলের উল্টোদিকে এই তেলেভাজার দোকানের ইউএসপি হল, এই দোকানের তেলেভাজা খেয়ে কাউর অম্বল হয়েছে, এমন অভিযোগ কেউ করতে পারেনি গত ১০০ বছরেও! স্বয়ং নেতাজি এসে তেলেভাজা খেয়ে গেছেন এখান থেকে। স্বদেশী আন্দোলনে বিপ্লবীদের গোপন ডেরায় তেলেভাজার জোগান দেওয়া হত এখান থেকে। প্রতিষ্ঠাতা লক্মীনারায়ণ সাউ নিজেও যুক্ত ছিলেন বিপ্লবীদের সঙ্গে। স্বদেশীদের গোপন খবর আদানপ্রদান হত এখান থেকে। এক প্রজন্ম থেকে চার প্রজন্মে পৌঁছেছে এই দোকান। তাতেও খাবারের মান রয়ে গিয়েছে একইরকম। রান্নার তেল, বেসন, মশলা, রান্নার উপকরণ নিয়ে কেউ কোনওরকম আপোশ করতে রাজি নন আজও।
আজকের দিনে কত লোককে বিনাপয়সায় তেলেভাজা খাওয়াচ্ছেন আপনারা? লক্ষ্মীকান্ত সাউয়ের পক্ষ থেকে কৃষ্ণকুমার গুপ্তা এশিয়ানেটকে বললেন, "এবারে সংখ্য়াটা পাঁচ থেকে ছ-হাজারে পৌঁছেছে। অবশ্য় প্রতিবছরই এমন ভিড় থাকে। তবে সংখ্য়াটা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।"
কী থাকে লক্ষ্মীনায়ারণের রোজকার মেনুতে? উত্তরে বলতে হয়, কী থাকে না এঁদের মেনুতে? বেগুনি, পেঁয়াজি আর আলুরচপ থেকে শুরু করে, কাশ্মীরি চপ, পনির কাটলেট, ভেজ কাটলেট, ফুলকপির চপ, নারকেল চপ, সোয়াবিন কাটলেট, ধোঁকার বরফি, সোয়াবিন চপ, পনির চপ, আমের চপ, চাউমিন চপ, ফুলুরি, সবকিছুর অবিরাম অফুরান জোগান এখানে। "তবে আজকের দিনে বাছাই করে পাঁচটি আইটেম থাকছে মেনুতে", জানালেন কৃষ্ণকুমার গুপ্তা।