সাপ নিয়ে সচেতনতা প্রসারে বিভিন্ন জায়গায় কর্মশালা করতেন। সাপ ধরার জন্য ডাক আসত বন দফতর থেকেও। এমন একজন মানুষ শেষে কিনা মারা গেলেন সাপের কামড়েই। প্রবীণ সর্পবিশারদ অনুপ ঘোষের মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য়ের সর্পপ্রেমীদেরও। এ রাজ্যে সাপ ধরে অ্যান্টি ভেনম তৈরির অনুমতি চেয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি লিখেছেন তাঁরা। সর্পপ্রেমীদের দাবি, এখন যে অ্যান্টি ভেনম দিয়ে এরাজ্যে সাপের কামড় খাওয়া রোগীর চিকিৎসা করা হয়, তা বহুক্ষেত্রে আর কাজ করছে না। ফলে বেঘোরে মারা যাচ্ছেন অনেকেই।
বিষে বিষে বিষক্ষয়... এই নীতি মেনেই সাপের কামড়ে খাওয়া রোগীর চিকিৎসা করা হয়। অর্থাৎ সাপের বিষ যেমন মানুষের প্রাণ কাড়তে পারে, তেমনি আবার সাপের বিষের তৈরি ওষুধে কিন্তু রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠেন। শুধু এ রাজ্যেই নয়, সারা দেশের সাপের কামড়ে একমাত্র ওষুধ অ্যান্টি ভেনম। এই অ্যান্টি ভেনম তৈরি করা হয় সাপেরই বিষ থেকে। কিন্তু এ রাজ্যে তো আইনত সাপ ধরা নিষিদ্ধ। তাহলে অ্যান্টি ভেনম আসে কোথা থেকে? জানা গিয়েছে, তামিলনাড়ু থেকে অ্যান্টি ভেনম আমদানি করা হয়। দক্ষিণ ভারতের ওই রাজ্যে সাপ ধরায় কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু বাংলার যদি কাউকে সাপে কামড়ায়, তাহলে ভিনরাজ্য থেকে আনা অ্যান্টি ভেনম দিয়ে চিকিৎসা করে কিন্তু লাভ হচ্ছে না। বেঘোরে মারা যাচ্ছেন রোগী। অন্তত তেমনই দাবি সর্প বিশারদদের। তাঁদের বক্তব্য়, সাপের প্রজাতি একই হলেও অঞ্চল ভেদে বিষের প্রভাবে তারতম্য ঘটে।
ব্যাপার কী রকম? ধরুন তামিলনাড়ুতে চন্দ্রবোড়া সাপ ধরে তার বিষ থেকে অ্যান্টি ভেনম তৈরি করা হল। আর বাংলায় যে ব্যক্তি চন্দ্রবোড়া কামেড়েছে, তাঁকে সেই অ্য়ান্টি ভেনম দিয়ে চিকিৎসার করা হল। তাহলে কিন্তু বিশেষ লাভ হবে না। এক্ষেত্রে ভিন রাজ্যের নয়, বরং স্থানীয় এলাকার চন্দ্রবোড়া সাপের বিষ দিয়ে তৈরি অ্যান্টি ভেনম যদি রোগী শরীরের প্রয়োগ করা হয়, তাহলেই ফল পাওয়া যাবে। কিন্তু তেমনটা আর হচ্ছে কই! যেহেতু সাপ ধরা আইনত নিষিদ্ধ, তাই ২০১৬ সাল থেকে এ রাজ্যে আর অ্যান্টি ভেনমও তৈরি হয় না। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে সাপ ধরায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানিয়েছেন সর্পপ্রেমীরা।