কোন যুক্তিতে ৩ সপ্তাহ ভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে? আদালতের নির্দেশ মতো কেন ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য ভোট পিছিয়ে দেওয়া হল না? তা জানতে চেয়ে কমিশনকে ওই নোটিস পাঠিয়েছেন জনস্বার্থ মামলাকারী বিমল ভট্টাচার্য।
রাজ্যে চার পুরনিগমের (Municipal Corporation Election) ভোট হওয়ার কথা ছিল ২২ জানুয়ারি। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতির (Corona Situation) কথা মাথায় রেখে তা তিন সপ্তাহ পিছিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর তার জেরেই এবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে (State Election Commission) আদালত অবমাননার নোটিস (Notice) ধরিয়েছেন জনস্বার্থ মামলাকারী বিমল ভট্টাচার্য। কোন যুক্তিতে ৩ সপ্তাহ ভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে? আদালতের নির্দেশ মতো কেন ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য ভোট পিছিয়ে দেওয়া হল না? তা জানতে চেয়ে কমিশনকে ওই নোটিস পাঠিয়েছেন তিনি। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে। না হলে কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার (Contempt of court) হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
২২ জানুয়ারি বিধাননগর, চন্দননগর, শিলিগুড়ি এবং আসানসোল পুরনিগমে (Municipal Corporation Election) ভোট হওয়ার কথা ছিল। এদিকে তারই মধ্যে হু হু করে বাড়তে শুরু করে করোনার দৈনিক সংক্রমণ (Daily Corona Cases)। আর সেই কারণেই বার বার ভোট পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। তারপর এনিয়ে হাইকোর্টে (Kolkata High Court) জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করা হয়। অবশেষে সেই ভোট ১২ ফেব্রুয়ারি করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আর ভোট গণনা ১৫ ফেব্রুয়ারি। এমনকী, নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা আগে প্রচার বন্ধ করারও নির্দেশ দেয় আদালত। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি নিয়ে জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সমাজকর্মী বিমল ভট্টাচার্য। এবার তিনিই হাইকোর্ট অবমাননার নোটিশ পাঠালেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।
আরও পড়ুন- নবান্নের কাছেই উড়ালপুলে বোমাতঙ্ক, কী বলছে পুলিশ
রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকী, ভোট পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা তা পুনর্বিবেচনা করার কথা বলেছিল আদালত। আদালতের পরামর্শ ছিল ন্যূনতম ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে পুরনিগমের নির্বাচন। কিন্তু হাইকোর্টের সেই পরামর্শের পরেও কেন তাকে মান্যতা দিল না কমিশন? সেই প্রশ্ন তুলেই এবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আদালত অবমাননার নোটিস পাঠিয়েছেন মামলাকারী বিমল ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন- ফের বাড়ল বাংলার কোভিড গ্রাফ, কলকাতায় বাড়ছে মৃত্যু, কী বলছে রাজ্যের করোনা বুলেটিন
মামলাকারীর প্রশ্ন, কোন যুক্তিতে কমিশন শুধুমাত্র তিন সপ্তাহের জন্য ভোট পিছিয়েছে? কেন আদালতের পরামর্শ মতো ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হল না পুরনিগমের ভোট? এর পিছনে কমিশনের কী যুক্তি রয়েছে? সেই সব বিষয়ে সবিস্তারে জানতে চেয়ে নোটিস পাঠানো হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। সাত দিনের মধ্যে কমিশন এর উত্তর না দিলে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হবে বলে কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিমল ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন- স্কুলের শিবিরে টিকা নিতে গিয়ে বিপত্তি, একই দিনে এক ছাত্রকে দেওয়া হল দুটি ডোজ
করোনার বাড়বাড়ন্তের জেরে রাজ্যে জারি রয়েছে বিধিনিষেধ। রাজ্যে দৈনিক করোনা (Coronanavirus) সংক্রমণ ১০ হাজারের উপরেই রয়েছে। বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের (West Bengal Health Deaprtment) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ৪৪৭ জন। রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনে মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের। আর রাজ্যের এই করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই তিন সপ্তাহের জন্য ভোট পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে কমিশনের কাছে এই জবাব চেয়ে পাঠিয়েছেন মামলাকারী।