শহরে এসে দমবন্ধ, চিঠি লিখে আত্মঘাতী সেন্ট জেভিয়ার্সের মেধাবী ছাত্র

  • শহরের আদবকায়দার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে আত্মহত্যা
  • আত্মঘাতী কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্সের ছাত্র হৃষিক কোলে
  • চিঠি থেকে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
  • কৃতি ছাত্রের অকাল মৃত্যুতে সিঙ্গুরের বাড়িতে শোকের ছায়া
     

হুগলির সিঙ্গুর থেকে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়তে আসা। কিন্তু শহুরে জীবনযাপনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছিল তাঁর। ছোট থেকে বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করাটাও বাড়তি মানসিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মানসিক চাপের কাছে হার স্বীকার করেই সম্ভবত আত্মঘাতী হল কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র হৃষিক কোলে (১৮)। 

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই কলকাতায় কলেজের হোস্টেল থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় হৃষিক। ওই দিন দুপুর নাগাদ উত্তরপাড়া-হিন্দমোটর স্টেশনের মাঝামাঝি রেললাইনের উপরে একটি দেহ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। কিন্তু মৃতের পরিচয় জানতে পারেনি তারা।

Latest Videos

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত হৃষিক না ফেরায় জেভিয়ার্সের হোস্টেল সুপার পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের  করেন। খবর দেওয়া হয় তাঁর পরিবারকেও। হোস্টেল কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল দশটা নাগাদ হৃষিক হোস্টেল থেকে বেরিয়ে যায়। তার পর সে আর ফেরেনি। হোস্টেলের সিসিটিভি ফুটেজও সেই কথাই বলছে। পরে তাঁকে ফোন করা হলে তাঁর ফোনও সুইচ অফ থাকায় বাধ্য হয়ে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ পুলিশের দারস্থ হয়।

এদিকে উদ্ধার হওয়া দেহটি শনাক্ত না হওয়ায় প্রথমে সেটি হাওড়ার পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার হৃষিকের নামে দায়ের হওয়া নিখোঁজ ডায়েরির কথাটি জানতে পারে রেল পুলিশ। রেল লাইনে উদ্ধার হওয়া দেহের সঙ্গে ওই ছাত্রের মিল থাকায় পুলিশ দেহ শনাক্ত করার জন্য হৃষিকের পরিবারকে খবর পাঠায়। শুক্রবার হৃষিকের বাবা এসে ছেলের দেহ শনাক্ত করেন এবং হৃষিকের লেখা চিঠিটি দেখেই তিনি তাঁর ছেলের হাতের লেখাও চিনতে পারেন।

তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, হৃষিকের পকেট থেকে পাওয়া চিঠি পড়ে পুলিশের সামনে বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে। চিঠিটি পড়ে তাঁরা এও জানতে পারেন, হুগলির সিঙ্গুর থেকে কলকাতায় এসে শহুরে জীবনযাপনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলনা সে। শুধু তাই নয়, ওই ছাত্র চিঠিতে এও লিখেছেন যে, ইংরেজিতে পড়াশোনা করতে তাঁর বেশ অসুবিধা হচ্ছিল । তার উপর, পছন্দের বিষয় অঙ্কের বদলে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করাটাও মন থেকে মেনে নিতে পারেননি তিনি।  আর এই সবকিছু থেকে মুক্তি পেতেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন হৃষিক। 

লালবাজারের এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, বেলুড়ের রেল পুলিশ হৃষিকের দেহ উদ্ধার করলেও তাঁর কাছে কোনও মোবাইল ফোন বা পরিচয়পত্র না মেলায় তাঁকে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। এমন কী, তাঁর চিঠিটিতেও কোনও নাম লেখা ছিল না। ফলে প্রথমে তদন্ত করতে অসুবিধা হলেও পরে সবটাই সামনে আসে।       
       
হৃষিকের এই অকালমৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাঁর পাড়া প্রতিবেশি ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে। তাঁদের থেকেই জানা গিয়েছে, অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল হৃষিক। উচ্চমাধ্যমিকে ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করার পরে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হয় সে। তবে শান্ত স্বভাবের ছেলেটির এমন মর্মান্তিক পরিণতি মেনে নিতে পড়ছেন না কেউই।       

Share this article
click me!

Latest Videos

আরে ওরা কি করবে, সেদিন আমি ওদের সামনে আরতি করে বুঝিয়ে দিয়েছি : শুভেন্দু | Suvendu Adhikari
শুরু জোর তল্লাশি, Bangladesh থেকে Gosaba! জঙ্গি ও অনুপ্রবেশ রুখতে রাস্তায় নামল পুলিশ | Gosaba News
'ইয়ে ডর মুঝে আচ্ছা লাগা' হিন্দুদের প্রতি সহানুভুতি, বাংলাদেশী জঙ্গিদের টার্গেট Suvendu Adhikari
Daily Horoscope: ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার এই ব্যক্তিদের দিনটি ভালো যাবে, জেনে নিন আজকের রাশিফল
‘Chinmoy Krishna-কে আমি মুক্ত করবোই’ নির্ভীক Bangladeshi আইনজীবী Rabindra Ghosh-এর চরম প্রতিশ্রুতি