দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দেশবাসী। রাজনীতির বাইরের লোকজনও শোকপ্রকাশ করেছেন বাঙালি রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে। রাজ্য় থেকেও প্রণব মুখোপাধ্য়ায় নিয়ে অজানা গল্প শোনাচ্ছেন বর্ষীয়ান নেতারা। তেমনই এক স্মৃতির কথা উল্লেখ করলেন রাজ্য়ের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। প্রণববাবুর সঙ্গে কেমন সম্পর্ক ছিল বর্তমান পুর প্রশাসকের।
ফিরহাদ বলেন, প্রণবদার মৃত্যু ভারতের রাজনীতিতে নক্ষত্র পতন। ওনার সঙ্গে আমার ভ্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো ছিল। অনেক ছোট থেকে আমাকে চিনতেন। একবার এক অনুষ্ঠানে আমার নাম বলতে গিয়ে,আমাকেই জিজ্ঞাসা করে বসেন। বলেন, তোর ভালো নামটা কী যেন ববি ? ওনার সাউদার্ন অ্য়াভিনিউয়ের বাড়িতে যেতাম। আমার মনে পড়ছে, উনি তখন দেশের অর্থমন্ত্রী। আমাদের সব সরকার হয়েছে। বাংলায় অমিত মিত্র অর্থমন্ত্রী তখন। পরবর্তীকালে উনি দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। রাজ্য়ে এলে মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় ওনাকে রিসিভ করার জন্য় আমাকেই পাঠাতেন। দেখা হলেই বলতেন, ববি কেমন আছিস ভালো আছিস তো। যেন এক অভিভাবক প্রস্ন করছেন। উনি চলে যাওয়ায় সেই সংস্পর্শটা আর পাব না।'
কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে আগেই। নিয়ম অনুযায়ী দেশের রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে সাতদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এবার সেই পথে হেঁটে স্বরাষ্ট্র দফতরকে একই নির্দেশ জারি করলেম মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য়ে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হবে। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্য়ে রাজ্য়ে সমস্ত সরকারি বিল্ডিংয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। আগামীকাল সব ধরনের সরকারি দফতর, স্কুল-কলেজ সব জায়গায় ছুটি। এছাড়া শেষকৃত্য যে দিন অনুষ্ঠিত হবে সেদিনও সব বন্ধ থাকবে। তবে আগামীকাল পুলিশ দিবসের নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী তা পালন হবে। যদিও এই দিবসের উদযাপন হবে ৮ সেপ্টেম্বর।
এদিন প্রণববাবুর মত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'একটি যুগের অবসান। ভারতরত্ন প্রণব মুখোপাধ্যায় আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। গত কয়েক দশক ধরে তিনি পিতৃসম ব্যক্তিত্ব ছিলেন।' মুখ্য়মন্ত্রীর পাশাপাশি ভারতরত্ন প্রণব মুখোপাধ্য়ায় নিয়ে শোকস্তব্ধ রাজ্য়পাল জগদীপ ধনখড়। টুইটারে তিনি লেখেন,প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ভারতরত্ন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোক প্রকাশ করছি। ওনার মৃত্যুতে একটি যুগের অবসান ঘটল। জনজীবনে একটি বিশালাকৃতির মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। দেশের উন্নয়নে উনি পক্ষপাতিত্বমূলক রাজনীতির উর্ধে উঠে কাজ করেছেন।