বুধবারে ঘটে যাওয়া কোননগরের নবগ্রাম হীরালাল পাল কলেজের অধ্যাপক নিগ্রহের ঘটনা কারোরই অজানা নয়। ঘটনার ছবি বারবার ফুটে উঠেছিল বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের পর্দায়। তারপরেই উঠে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনার মূল অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে তৃণমূল কাউন্সিলর তন্ময় দেব প্রামাণিকের নাম। তিনি কোন্নগর পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। অভিযোগ আসে তাঁর উষ্কানিতেই নাকি ওই কলেজের ছাত্ররা এমনটা করেছে।
বুধবারের ওই ঘটনার পরে নিগৃহীত অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেতে যান তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব ও উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তাঁরা এই ঘটনার জন্য নিগৃহীত অধ্যাপকের কাছে হাত জোড় করে ক্ষমাও চান। এরপরেই ওনারা জানতে চান ঘটনার পিছনে কার হাত রয়েছে। প্রথমে অধ্যাপক ভয়ে মুখ খুলতে চাননি। বারবার নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি যদি তাঁর নাম নিই তবে কাল থেকে আমার কলেজে ঢোকাই বন্ধ হয়ে যাবে।' এরপর প্রবীর ঘোষাল ও দিলীপ যাদব অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে আশ্বস্ত করে সব খুলে বলতে বলেন। বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এও বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন। কে কত বড় দাদা হয়েছে, আমি দেখে নেব। আপনি নামটা বলুন।' এরপরেই কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়ে সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলতে শুরু করেন 'কউন্সিলর তন্ময় দেব প্রামাণিক কলেজে ঢুকে যখন তখন হম্বিতম্বি করেন। ছাত্রদের তিনি উস্কানি দেন অধ্যাপকদের পেটানোর জন্য ও কলেজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করার জন্য। বুধবার তাঁর নির্দেশেই ছাত্ররা এমনটা ঘটিয়েছে। আমাদের ছাত্ররা আসলে এমনটা একেবারেই নয় তাদের এমন দুঃসাহস কখওনই হবেনা যে তারা শিক্ষকের গায়ে হাত তুলবে। বহিরাগতদের নির্দেশেই তারা এমনটা ঘটিয়েছে।'
নিগৃহীত অধ্যাপকের কাছ থেকে সবটা জানার পরেই প্রবীর ঘোষাল ও দিলীপ যাদব সিদ্ধান্ত নেন তন্ময় দেব প্রামাণিককে শোকজ করার। কারণ সকলে মনে করছেন তিনি যা করেছেন তাঁর শাস্তি এটা ছাড়া আর কিচ্ছু হতে পারে না। একজন অধ্যাপকের ওপর এইভাবে চড়াও হওয়ার শাস্তি এইরকমই কিছু হওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগে অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় আপাতত আশ্বস্ত হয়েছেন বলেই জানিয়েছেন। নিশ্চিন্তে কলেজে আপাতত ছাত্র পড়ানোতে তিনি মন দিতে পারবেন বলেই মনে করছেন।