জাতীয় স্তরে স্কুলভিত্তিক প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জিতেছে সে। প্রশিক্ষকের মারে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছে প্রতিশ্রুতিমান এক সাতারু! কানেও গুরুতর আঘাত লেগেছে তার। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কলকাতার হেদুয়া পার্কে। বটতলায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই কিশোরের পরিবারের লোকেরা।
জখম কিশোরের নাম অপরাজয় চণ্ডী বসু। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র সে। প্রায় দশ বছর ধরে হেদুয়ার ন্যাশনাল সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের সাঁতার শিখছে অপরাজয়। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যায় অনুশীলন করার সময়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেন ট্রেনার প্রবীর বসাক। এরপরই বমি করতে থাকে ওই কিশোর, তার কানে ও মাথায় প্রবল যন্ত্রণা শুরু হয়। এমনকী, কানের দু'পাশের গভীর ক্ষতও তৈরি হয় বলে অভিযোগ। বমি বন্ধ না হওয়ায় অপরাজয়কে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারে লোকেরা। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, কানে আঘাত লাগলেও পর্দার তেমন কোনও বড় ক্ষতি হয়নি। কিন্তু বমি কেন বন্ধ হচ্ছে না? অপরাজয়-এর সিটি স্ক্যান ও এক্সরে করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু সিটি স্ক্যান করার পর জানা যায়, ওই কিশোরের মাথার ভিতরেও গুরুতর কোনও আঘাত লাগেনি। শেষপর্যন্ত তাকে রেফার করা হয় রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি বা চক্ষু বিভাগে। সেখানেই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে, মারধরের ফলে প্রতিশ্রুতিমান ওই সাতারুর চোখের মারাত্বক ক্ষতি হয়েছে, কমেছে দৃষ্টিশক্তিও। সোমবার রাতে অভিযুক্ত সাঁতার প্রশিক্ষক প্রবীর বসাকের বিরুদ্ধে বটতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অপরাজয় চণ্ডী বসুর পরিবারের লোকেরা।
আরও পড়ুন: টাকা না দেওয়া নির্মম মার, ছেলের হাতেই খুন মা
এদিকে সোমবার রাতে আহত ওই সাতারুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন হেদুয়ার ন্যাশনাল সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। বাড়িতে গিয়ে 'অনভিপ্রেত' ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, অপরাজয়-এর চিকিৎসার যাবতীয় খরচই ক্লাব কর্তৃপক্ষই বহন করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।