ঘূর্ণীঝড় অশনির জেরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল রাজ্যে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, এবার প্রায় সারা সপ্তাহ ধরেই ঘূর্ণীঝড়ের জেরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি চলবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। যদি আদ্রতা বিপুল পরিমাণে না বাড়ে, তাহলে চলতি সপ্তাহ সুখে হতে চলেছে।
ঘূর্ণীঝড় অশনির জেরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল রাজ্যে। এমনিতেই মাঝে সামান্য কালবৈশাখী এবং বৃষ্টির দেখা মেলায় বাংলার তাপমাত্রা কিছুটা নেমেছিল। তবে তা ক্ষণস্থায়ী। তবে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, এবার প্রায় সারা সপ্তাহ ধরেই ঘূর্ণীঝড়ের জেরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি চলবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। যদি আদ্রতা বিপুল পরিমাণে না বাড়ে, তাহলে চলতি সপ্তাহ সুখে হতে চলেছে। যদিও এই ঘূর্ণীঝড়ের জেরে প্রবল বর্ষণ আবার বাংলার অনেক মানুষকেই ডোবাবে। বিশেষ করে বাংলার কৃষিক্ষেত্র।
কদিনের কাঠফাটা রোদ্দুরে প্রাণ হারিয়েছে একাধিক মানুষ। সানস্ট্রোক করেছে অনেকেরই। স্কুলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বাচ্চারা। যার জেরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গরমের ছুটি ঘোষণা করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োরপাধ্যায়। তবে এই জ্বালা ধরানো গরম কিন্তু রাজ্যের মধ্যে বেশিরভাগটাই দক্ষিণবঙ্গে। উত্তরবঙ্গে ততটা ভয়াবহ আবহাওয়া পরিস্থিতি নেই। তাই সোমবার বৃষ্টি শুরু হতেই যেনও প্রাণ ফিরে পেল তিলোত্তমা। অতিরিক্ত পরিমাণে বৃষ্টি হলে পুকুরের জল উপচে মাছ ভেসে যাওয়ার একটা আশঙ্কা রয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে তো ক্ষতির আশঙ্কা আছেই। তাই রাজ্য সরকার ঝড় আসার আগেই ধান কেটে নেওয়া নির্দেশ দিয়েছিল।
আরও পড়ুন, ঘূর্ণীঝড় অশনির জেরে প্রবল বর্ষণ বঙ্গে, পুরসভার ছুটি বাতিল, ১৩ মেয়র পারিষদকে গুরু দায়িত্ব
অপরদিকে, প্রতিবার বর্ষায় বা অকাল বর্ষণে সবার আগে শহর কলকাতার মধ্যে করুণ অবস্থা হয় বেহালার। জল জমে সমস্যার মধ্যে পড়ে বেহালাবাসী। তবে এবার অনেক আগে থেকেই কলকাতা পুরসভার জল নিকাশি থেকে জল সরবারহ সব বিভাগগুলি নিয়েই খেয়াল রাখা হচ্ছে মেয়র পারিষদের তরফে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে একটা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমফানের সময়ে কলকাতায় ৩ দিনের উপরে কারেন্ট ছিল না। চাপের মধ্যে পড়তে হয়েছিল সিইএসসি-কে। তবে অতীতের শিক্ষা নিয়ে আগের থেকে অনেক বেশি প্রস্তুত রাজ্যে বিদ্যুৎ দফতর।
আরও পড়ুন, ঘূর্ণীঝড়ের জের, ভাঙন না রুখলে বিলীন হবে কপিল মুনির আশ্রম, হারাবে সুপ্রাচীন গঙ্গাসাগর
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই শনিবার শক্তিশালী ঘূর্ণীঝড়ে পরিণত হয়েছে অশনি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, কলকাতায় অশনির তেমন একটা প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে সোমবার শহরে হালকা বৃষ্টি হবে। মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার শহরে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধ এবং বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। বাকি জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। সোমবার সন্ধ্যের মধ্যে মৎসজীবীদের সমুদ্র থেকে ফেরার নির্দেশ। মঙ্গলবার ১০ মে থেকে সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।একইভাবে দীঘা,মন্দারমণী সমুদ্রতটে যেতে পর্যটকদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
হাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় অশনি অন্ধ্র ও ওড়িশা উপকূলের দিকে উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে এগোবে। উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি পৌছে, সেটি অভিমুখ পরিবর্তন করবে। এরপর উত্তর-পশ্চিম দিক ছেড়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, ক্রমশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করবে ঘূর্ণীঝড় অশনি। ওড়িশা উপকূল বরাবর সমান্তারালেভাবে এটি এগোবে। উল্লেখ, ঘূর্ণীঝড় অশনির প্রভাবে সোমবার শহরে হালকা বৃষ্টি হবে। মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার শহরে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধ এবং বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। মূলত হালকা ঝোড়ো হাওয়া এবং ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়।