শনিবার সকাল থেকে শহরে গুমোট ভাব। তবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি হতে পারে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
শনিবার সকাল থেকে শহরে গুমোট ভাব। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি হতে পারে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। রাজ্যে তীব্র দাবদাহে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। অনেকেই বেলা এগারোটা থেকে ৪ টের মধ্যে বাইরে থাকলে অসুস্থ অনুভব করছেন। ইতিমধ্য়েই শহরে প্রচন্ড তাপে এক ছাত্রী সহ এক যুবকের মৃত্যুও হয়েছে। কচি-কাঁচারা স্কুলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায়, ইতিমধ্যেই স্কুলে গরমের ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। এহেন পরিস্থিতি থেকে এখনই বিরাম নেই। দাবদাহের দাপটের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কলকাতায় লু-র প্রকোপ কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও সুখবর এটাই, এবার সপ্তাহান্তে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এরই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে ফের ঘূর্ণাবর্তের পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বৈশাখের তীব্র দাবদাহের মধ্য়েই এমন সময় ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা শোনাল আবহাওয়া দফতর। তীব্র তাপপ্রবাহের মাঝেই শুক্রবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি হতে পারে। আগামী সপ্তাহে সোমবার ও মঙ্গলবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কালবৈশাখীহীন চৈত্র-বৈশাখ সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহ চলবে। গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গে পারদ কিছুটা নিম্নগামী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমের জেলাগুলিতে এদিনও থাকবে তীব্র গরম। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমানে বইবে লু। যদিও তীব্র দাবদাহের অস্বস্তি কাটিয়ে, আগামী সপ্তাহের শুরুতেই কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ১ -৩ মে-এর মধ্যে শহরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতায় আপাতত তাপপ্রবাহের কোনও পরিস্থিতি তৈরি হবে না। তবে অস্বস্তিকর গরম বজায় থাকবে।
আরও পড়ুন, 'মিড ডে মিলের টাকা মারতেই স্কুলে গরমের ছুটি', শুভেন্দু-দিলীপদের তোপের মুখে মমতার সরকার
প্রসঙ্গত, শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় থাকবে।উল্লেখ্য, এই সময় অন্য বছরগুলিতে তিন থেকে চারটি কালবৈশাখী হয়ে যায়। কিন্তু, এবছর এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে একটিও কালবৈশাখী হয়নি। বিগত অনেকদিন ধরেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। শীতের সময় উত্তরবঙ্গের থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বেশি হয়েছিল। কিন্তু, তারপর থেকে আর বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষবারের মতন বৃষ্টি হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। তারপর থেকে আর বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন, অনুব্রত-র গাড়িতে লালবাতি কেন ? প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে মামলা বিজেপি নেতার
মে মাসের শুরুতে এখন কলকাতায় স্বস্তির বৃষ্টি হয় কিনা, সেটাই দেখার বিষয়। তবে কলকাতায় লু-র প্রকোপ কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।আদ্রতার ফলে আরও অস্বস্তি বাড়বে। এদিন আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গে দাবদাহের পরিস্থিতি কমবে। বাড়বে আদ্রতা জনিত অস্বস্তি। তবে উত্তরবঙ্গে প্রকৃতি অনেকটাই অনুকূলে থাকবে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার-সহ বিভিন্ন সমতল এলাকায় দমকা হাওয়া এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং, কালিংপং সহ পার্বত্য এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। পাবর্ত্য এলাকায় বৃষ্টি পরিমাণ কিছুটা বাড়বে।
আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, আগামী ৫ মে-র পরেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে একটি ঘূর্ণাবর্ত। যা মূলত বড় আকারের ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিতে পারে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আমফানের মতো শক্তি নিয়ে সেই ঝড় আছড়ে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশ উপকূলে। আবহবিদরা জানিয়েছেন, উত্তর ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ আন্দামান সাগরে সৃষ্টি হবে ওই বড় ঘূর্ণাবর্ত। এবার ধীর ধীরে ক্রমশ শক্তি বাড়াতে শুরু করবে ঘূর্ণাবর্তটি।