একেবারে উল্টো কথন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে উদ্ধার করে আনলেন যিনি,তাঁকেই দোষারোপ করল শাসক দল। বিবৃতি দিয়ে যাদবপুরে রাজ্যপালের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী।
মাঝে টানা সাড়ে ৫ঘণ্টার লড়াই। শেষে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান উদ্ধারে নামলে মুক্তি পান তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে উদ্ধার করতে গিয়ে ছাত্র বিক্ষোভর মুখে পড়তে হয় খোদ রাজ্যপালকে। এমনকী ছাত্ররা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ায় গাড়ির মধ্যেই কাটাতে হয় টানা দেড় ঘণ্টা। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে উদ্ধার করেই বাড়ি ফেরেন তিনি। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যপালের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, যাদবপুরে যাওয়ার পথেই মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে ফোন কথা হয় রাজ্যপালের। তখন যাদবপুরে না যেতে অনুরোধ করেন মুখ্য়মন্ত্রী। বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হাজির হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এখানেই থেমে না থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ ডাকার নির্দেশ দেন তিনি। উপাচার্যকে পুলিশ ডাকুন নতুবা পদত্যাগ করুন এমনই কড়া কথা বলেন তিনি।
এবিভিপির নবীন বরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। প্রথম থেকেই বাবুলকে বিশ্ববিদ্য়ালয়ে ঢুকতে বাধা দেয় বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের পড়ুয়ারা। অভিযোগ, গো-ব্যাক স্লোগানের মাঝে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ধাক্কা মারে ছাত্ররা। এমনকী তাঁর চুল ধরেও টানা হয়। এরপরই ক্যাম্পাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল ভবনে ফোন করেন বাবুল। পরে খোঁজ নিয়ে বিকেল ৪টে ১৫ তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে ফোন করেন রাজ্যপাল। দ্রুত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে হেনস্থার রিপোর্ট চেয়ে পাঠান তিনি। ক্য়াম্পাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হেনস্থার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
পরে রাজ্যপালের প্রেস সচিব মানব বন্দ্যোপাধ্যায় বিবৃতি দিয়ে জানান, যাদবপুরে মন্ত্রী হেনস্থার কাণ্ডে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। এ বিষয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিব মলয় দের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি কেন যাদবপুরে মন্ত্রীকে হেনস্থা হতে হল তাও জানতে চাওয়া হয়েছে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের কাছে। এদিকে হেনস্থার পর ঘটনার জন্য উপাচার্যকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বাবুল। উপাচার্যকে তিনি বলেন, আমার মুখে ঘুসি মারছে, চুল ধরে টানছে। ক্যাম্পাসে একজন মন্ত্রী আসছেন জেনেও আপনি তাঁকে স্বাগত জানাতে আসেননি। আপনাদের মতো লোকের জন্যই আজ পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার এই অবস্থা। আপনি চাইছিলেন এটা হোক। আমি নিশ্চিত আপনি একজন বামপন্থী। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেন উপাচার্য। মন্ত্রীকে তিনি জানান, তাঁকে এবিভিপির অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি বলেই তিনি আসেননি। যখনই খবর পেয়েছেন তখনই ছুটে এসেছেন।