অভিযোগ, রাজ্যপাল সংবিধান বহির্ভূত কাজ করছেন। এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছেন তিনি। সে কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার।
রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত নতুন কিছু নয়। কয়েকদিন আগে 'বিরক্ত' হয়ে রাজ্যপালকে টুইটারে ব্লক করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরুর দিনই খোদ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে রাজ্যপালের অপসারণের দাবি জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই এবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অপসারণের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হল কলকাতা হাইকোর্টে।
মামলাকারী আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকারের অভিযোগ
অভিযোগ, রাজ্যপাল সংবিধান বহির্ভূত কাজ করছেন। এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছেন তিনি। সে কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। তাঁর প্রশ্ন, রাজ্যপাল কেমন করেন সংবিধান বহির্ভূত কাজ করেন? এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কীভাবে তিনি সরকারি কাজে বাধা দিতে পারেন? এই সব প্রশ্ন তুলেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন ওই আইনজীবী। এই মামলায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককেও পক্ষ করা হয়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজ্যপালকে টুইটারে ব্লক মমতার
সম্প্রতি রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত তুঙ্গে উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিয়ে টুইট করছিলেন রাজ্যপাল। আবার কখনও কোনও সরকারি কাজের জবাব চেয়ে রাজভবনে তলব করছিলেন সচিবদের। কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, 'বাংলা গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার হয়ে যাচ্ছে। বাংলার মাটিতে রক্তরঞ্জিত হতে দেখতে পারব না। আইনের শাসন নেই। শাসকের আইন চলছে। সংবিধান রক্ষা করা আমার কাজ। সংবিধান অনুযায়ী কাজ করবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, সময় বের করে আমার সঙ্গে কথা বলুন। ব্যক্তিগত ইগো নিয়ে চলা ঠিক নয়।' তবে এখানেই শেষ নয় সম্প্রতি পেগাসাস-কাণ্ডে রাজ্য সরকার গঠিত তদন্ত কমিশন, রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ এবং বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজনের খরচ, মা ক্যান্টিন চালানোর খরচ, গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন, রাজ্য অর্থ কমিশন, অতিমারি পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনার খরচ-সহ একাধিক বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন ধনখড়। অভিযোগ তোলেন, এ সব বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে উত্তর চেয়েও পায়নি রাজভবন। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও চরমে পৌঁছায় রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। এরপরই টুইটার থেকে রাজ্যপালকে ব্লক করে দেন মমতা। নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে একাথা জানিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, 'বার বার বিরক্ত করছিলেন, তাই বাধ্য হয়ে ব্লক করে দিয়েছি।'
রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার
এরপরই রাজ্যপালকে অপসারণের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে নালিশ করেছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও নালিশ জানান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। কিন্তু, তারপরও কোনও লাভ হয়নি। তাই এবার আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১১ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানি হতে পারে।