
দৈনন্দিন জীবনে আমাদের চুল পড়ার সমস্যা এতোটাই বেড়ে গিয়েছে, যার জন্য আমাদের চুলের ত্বকে নানা রকম সমস্যা যেমন খুশকি, রুক্ষ চুল, চুল পড়া, চুলের আগা ভেঙ্গে যাওয়া, সব নিয়ে একেবারে নাজেহাল অবস্থা। তার মধ্যে এখনকার দূষণ, যার উল্লেখ না করলেই নয়। রাস্তাঘাটে প্রতিনিয়ত আমাদের বেরোতে হয়। এছাড়া একেক জায়গায় একেক রকম জলের সমস্যা থাকে। জলে অতিরিক্ত আয়রন থাকলে সেখানে চুলের প্রচণ্ড সমস্যা দেখা দেয়।
চুল দ্রুত বাড়ানোর জন্য ক্যাস্টর অয়েল, রোজমেরি অয়েল, পেঁয়াজ তেল, এবং আর্গান অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। যা মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, এবং চুলকে শক্তিশালী ও আর্দ্র রাখে। এই তেলগুলি নারকেল তেল বা সূর্যমুখী তেলের মতো ক্যারিয়ার তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
প্রতিদিন তেল মাখলে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় ৷ চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগায় এবং চুল ভাঙা রোধ করে ।
তাহলে জেনে নেওয়া যাক কোন কোন তেল চুলের জন্য বিশেষ উপযোগী:
* নারকেল তেল: নারকেল তেল চুলের জন্য সবচেয়ে উপকারী তেল হিসেবে বিবেচিত হয় । প্রোটিনের অভাবজনিত চুল পড়া রোধে এটি খুবই কার্যকর । এতে উপস্থিত লরিক অ্যাসিড সহজেই চুলের ভেতরে প্রবেশ করে এবং চুলকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে । এটি মাথার ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং খুশকি দূর করে । এরজন্য, মাথার ত্বক এবং চুলে সামান্য হালকা গরম নারকেল তেল লাগান । ভালো করে মাসাজ করুন এবং কমপক্ষে এক ঘণ্টা বা রাতারাতি রেখে দিন । তারপর একটি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।
* ক্যাস্টর অয়েল: চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ক্যাস্টর অয়েলকে জাদুর চেয়ে কম কিছু মনে করা হয় না । এটি ঘন এবং অন্য তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয় । এটি রিকিনোলিক অ্যাসিড নামক ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ, যা মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় । এটি চুলের ফলিকলগুলিকে সক্রিয় করে ৷ যা নতুন চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং চুল ঘন করে । ঘনত্বের কারণে, এটি নারকেল বা বাদাম তেলের মতো হালকা তেল, যেমন ১ অংশ ক্যাস্টর অয়েল এবং ২ অংশ নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োগ করুন ।
* জোজোবা তেল: জোজোবা তেল একটি মোমের এস্টার ৷ তবে এর বৈশিষ্ট্যগুলি এটিকে চুলের জন্য একটি নিখুঁত বিকল্প করে তোলে । এর গঠন আমাদের মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক সিবামের মতো কাজ করে।এটি মাথার ত্বককে ময়শ্চারাইজ করতে, খুশকি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং চুলের ফলিকল আটকে যাওয়া রোধ করতে সাহায্য করে । এটি সরাসরি চুলে প্রয়োগ করা যেতে পারে অথবা আপনার নিয়মিত চুলের তেলে কয়েক ফোঁটা যোগ করে ব্যবহার করা যেতে পারে ।
* ভৃঙ্গরাজ তেল: আয়ুর্বেদে ভিংরাজ তেলকে চুলের তেলের এক অন্যতম হিসাবে বিবেচনা করা হয় । এটি তিল বা নারকেল তেলে ভিংরাজ নামক একটি ভেষজ ফুটিয়ে তৈরি করা হয় । ভৃঙ্গরাজে উপস্থিত উপাদানগুলি চুলের গোড়া মজবুত করে, চুলের অকাল ধূসর হওয়া রোধ করে এবং চুল পড়া কমায় । এটি মাথার ত্বককে প্রশান্ত করে নতুন কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে । এটি মাথার ত্বকে হালকা গরম করে ৫-১০ মিনিট মাসাজ করুন । কমপক্ষে এক ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন